দেশের প্রতিটি জনপথে ছড়িয়ে আমাদের মুক্তির ইতিহাসের অসংখ্য গল্প। যে গল্পগুলো শুনলে এখনও বুকে কাঁপুনি দেয়—এতটাই নৃশংস সেগুলো। এরকমই একটি গল্পে নির্মিত হয়েছে ‘শ্বাপদ’। গল্পের প্রয়োজনে নাটকটি শুটিং হয়েছে ট্রেনে, টানা তিন দিন।
শ্বাপদের চিত্রনাট্য করেছেন মাসুম শাহরীয়ার। পরিচালনা করেছেন গোলাম মুক্তাদির। থিয়েটার এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে নাটকটি প্রযোজনা করেছেন পিকলু চৌধুরী।
পিকলু সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের শুটিংয়ের প্রয়োজনে আমাদেরকে ট্রেনের একটি বগি তিন দিনের জন্য ভাড়া নিতে হয়েছে। এ জন্য আমরা ২ লাখ ৬৪ হাজারটা ভাড়াও দিয়েছি। এত কিছু করেছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটি অজানা গল্প সবার সামনে ঠিকঠাকভাবে তুলে আনতে।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে ‘শ্বাপদ’ নির্মিত হয়েছে। এ গল্পের প্রধান চরিত্র ওয়াজিউল্লা চৌধুরী। তার মেয়ে লুৎফুন্নেসা ও নাতি রাশেদুল আউয়ালের কাছে শোনা গল্পই তুলে আনা হয়েছে নাটকটিতে।
ওয়াজিউল্লাহ চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান রেলওয়ের বিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে সংসার। ২১ বছর বয়সী বড় ছেলে আবুল কাসেম মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে চায়। কিন্তু চাকরি হারাবার ভয়ে ছেলেকে শাসন করেন ওয়াজিউল্লাহ।
’৭১ এ যুদ্ধের মধ্যে একদিন বদর বাহিনীর লোক পাকিস্তানি আর্মি দিয়ে ওয়াজিউল্লাহকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। সেখানে ক্যাপ্টেন লতিফ তাকে ট্রেনে একটি বগি খালি যুক্ত করতে বলে। যাতে করে কিছু মাল যাবে কুমিল্লা স্টেশনে।
নির্দেশনানুযায়ী মাল উঠাতে গিয়ে দেখে কয়েকশ মানুষের লাশ। এক সময় ওয়াজিউল্লাহ আবিষ্কার করে এর মধ্যে ১৭ জন তখনও জীবিত। এ অবস্থায় কী করবে ওয়াজিউল্লাহ এ নিয়ে সামনে এগোয় ‘শ্বাপদ’-এর গল্প।
পিকলু জানান, নাটকটি চিত্রায়িত হয়েছে সৈয়দপুর ও পার্বতীপুরে। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, শম্পা রেজা,শতাব্দী ওয়াদুদ, এফ এস নাইম, শাবনম ফারিয়া, আবুল কালাম আজাদ সেতু, রওনক রিপন প্রমুখ।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর ‘শ্বাপদ’ প্রচারিত হবে টেলিভিশন ও অনলাইনে।