বাবাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ শাফিনের ছেলে ওজি

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান। বাবার মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন ছেলে আযরাফ ওজি। শুধুই কাঁদছেন তিনি। কারো সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না।

বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তিনি। শাফিনের মামাতো বোন রুবাবা দৌলা বলেন, বাবার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর থেকে ওজি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কোনোভাবেই শান্তনা দেওয়া যাচ্ছে না তাকে।

তিনি জানান, শাফিন আহমেদের মরদেহ দেশে নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে। এরইমধ্যে আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় পৌঁছেছেন তার স্ত্রী নাহীন আহমেদ। এছাড়া বড় ভাই হামিন আহমেদ আজ রাতেই উড়াল দিচ্ছেন।

এর আগে ভাইয়ের মৃত্যুর কারণ জানিয়ে হামিন বলেন, ‘হয়তো বেশ চাপ গেছে শাফিনের ওপর দিয়ে। ২০ জুলাই ভার্জিনিয়াতে তার একটা কনসার্ট ছিল। শোয়ের আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। যে কারণে শো ক্যানসেল করেন। সেদিনই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শাফিনের নানা অর্গান অকার্যকর হতে থাকলে তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়। তবুও তাকে আর ফেরানো গেল না।’

শাফিন আহমেদের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। মা কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ফিরোজা বেগম এবং বাবা সংগীতঙ্গ কমল দাশগুপ্ত। এই পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণে ছোটবেলা থেকেই শাফিন আহমেদ গানের ভেতরেই বড় হন। শৈশবে বাবার কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীত শিখেছেন আর মায়ের কাছে শিখেছেন নজরুল।

এরপর বড়ভাই হামিন আহমেদসহ যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুবাদে পাশ্চাত্য সংগীতের সংস্পর্শে এসে ব্যান্ডসংগীত শুরু করেন। দেশে ফিরে গড়ে তোলেন মাইলস। যা দেশের শীর্ষ ব্যান্ডের একটি এখনও। এই ব্যান্ডের ৯০ ভাগ গান শাফিন আহমেদের কণ্ঠে সৃষ্টি হয়েছে। পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। তিনি কণ্ঠের পাশাপাশি ব্যান্ডটির বেজ গিটারও বাজাতেন।

সংগীতের পাশাপাশি শেষ দিকে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন এ গায়ক। ২০১৭ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে (এনডিএম) যোগ দেন। এরপর ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টিতে যুক্ত হন। দুই দলেই গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন শাফিন।

শাফিন আহমেদের কণ্ঠে তুমুল জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে চাঁদ তারা সূর্য, জ্বালা জ্বালা, ফিরিয়ে দাও, ফিরে এলে না, আজ জন্মদিন তোমার প্রভৃতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.