বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন সোনালি দিনের নায়ক মাহমুদ কলি। আশির দশকের ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক তিনি। ৬১ সিনেমায় অভিনয় করা এই নায়ক এবার চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তারের প্যানেলের সভাপতি।
এর আগে দুই দফা করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল এক প্যানেল থেকে নির্বাচন করবে।
মিশা সওদাগরকে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ কলি বলেন, মিশা সওদাগর আমার ছোট ভাই। আমি যখন সভাপতি ছিলাম, সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, মিশা সবসময় আমার পাশে থেকে শিল্পের জন্য শিল্পীদের জন্য কাজ করেছে। মিশা ভালো মানুষ কিন্তু নির্বাচন নির্বাচনের মত হবে। নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়, প্রত্যেক সদস্য যেন বিচার-বিবেচনা করে ভোট দেয় সেটিই হবে বড় কথা। মিশা আমার ছোট ভাই, সে ভালো মানুষ, কোন সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, একটা কথা বলেছি- আমি নেতৃত্বে এসেছি কিন্তু অভিনয় করতে আসিনি। আমি নেতৃত্বে এসে সকল শিল্পীদের নিয়ে সেতু বন্ধন করার চেষ্টা করব। চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলোকে একত্র করে শিল্পের সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে যেতে হবে।
রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় নিপুণ তার প্যানেলের সভাপতি ঘোষণা করেন। এরপর নিজের প্রত্যয়ের কথা ব্যক্ত করেছেন।
তার ভাষ্য, আমি সিনেমা করতে আসিনি। শিল্পী ও অন্যান্যদের মাঝে সেতুবন্ধন করতে এসেছি। শিল্পী সমিতিকে এগিয়ে নিয়ে যাব, শিল্পীদের স্বার্থে কাজ করব, চলচ্চিত্র শিল্পের স্বার্থে কাজ করব।
বিগত দিনে শিল্পী সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়ে গুণী এই অভিনেতা বলেন, অনেক কিছু দেখেছেন, শুনেছেন কিন্তু আমি মনে করেছি এবং আমি দেখেছি কিন্তু এই সমস্যার মধ্যেও নিপুণ আক্তার বলিষ্ঠ চিত্তে শিল্পীদের স্বার্থে নিজেকে নিবেদন করেছেন। আমি মনে করলাম এই মুহূর্তে আমার প্রয়োজন আছে। সেটা চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির জন্য, চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য। আমি আমার দক্ষতা, বিচক্ষণতা, অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিপুণ আক্তারকে সাথে নিয়ে এবং পুরো কমিটিকে সাথে নিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে যাব। শিল্পীদের জন্য এবং শিল্পের জন্য কাজ করব এই বিশ্বাসে তার সঙ্গে সভাপতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য সম্মতি দিয়েছি।
মাহমুদ কলি ছিলেন আশি ও নব্বই দশকের নায়ক। তার প্রথম সিনেমা ‘মাস্তান’। মোট ৬১টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’, ‘গোলমাল’, ‘নেপালি মেয়ে’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘সুপারস্টার’, ‘গ্রেফতার’, ‘খামোশ’, ‘মহান’, ‘দেশ বিদেশ, ‘মা বাপ’ ইত্যাদি।
মাহমুদ কলি ১৯৯১ সালে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার সঙ্গে সভাপতি ছিলেন অভিনেতা আহমেদ শরীফ। এরপর একই প্যানেল থেকে নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৫-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তবে এর পরের বছরে তিনি অভিনেতা মিজু আহমেদকে নিয়ে নতুন প্যানেলে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।