সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে নতুন একটি সার্চ কমিটি গঠণের খবর জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে সার্চ কমিটির তিন সদস্যের ছবি পোস্ট করে ফারুকী জানিয়েছেন, তাদেরকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কাজের বাইরে ‘দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান’, তরুণদের জন্য ‘তারুণ্যের উৎসব’সহ সাতটি অগ্রাধিকার কার্যক্রম ঘোষণা করেছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অগ্রাধিকারের তালিকা তুলে ধরেন তিনি। সাতটি কার্যক্রমের মধ্যে একটি ছিল ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন’। এ কার্যক্রমের জন্য ৮ সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ রায় স্বাক্ষরিত চিঠিতে তা জানানো হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কমিটি ‘রিমেম্বারিং মনসুন রেভল্যুশন’-এর সার্চ কমিটি দেশের আট বিভাগে চলচ্চিত্রবিষয়ক কর্মশালা, কারা হবেন সেই আট বিভাগের আট নির্মাতা, কর্মশালা পরিচালনায় কারা যুক্ত থাকবেন, সেসব তদারক করবে।
আট বিভাগের কর্মশালা শেষে প্রতি বিভাগ থেকে ১০ জন করে তরুণ নির্মাতাকে বাছাই করা হবে। তাঁরা দেশের বর্তমান সময়ের একজন তরুণ নির্মাতার তত্ত্বাবধানে ৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যের একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে জড়িত থাকবেন। আগামী বছরের জুলাইয়ে আট বিভাগের আটটি চলচ্চিত্র নিয়ে একটি উৎসব হবে। এসব চলচ্চিত্র দেশে প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশের বাইরের বিভিন্ন উৎসবেও প্রদর্শিত হতে পারে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামাকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্যের কমিটির মধ্যে আছেন সাহিত্যিক ও শিক্ষক সুমন রহমান; চলচ্চিত্র পরিচালক তানিম নূর, আদনান আল রাজীব; মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি; তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি; বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক।
ফারুকী তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, লেখক এবং শিক্ষক সুমন রহমান, পরিচালক-প্রযোজক তানিম নুর এবং আদনান আল রাজীবকে এক্সটারনাল এক্সপার্ট হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে একটা সার্চ কমিটি করা হয়েছে আজকে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাফরিজা শ্যামা এই কমিটির সভাপতি হিসাবে থাকছেন।
আপনারা জানেন, আমাদের সাতটা প্রায়োরিটি প্রোগ্রামের একটা ‘রিমেম্বারিং মুনসুন রেভুলুশন’। এর একটা উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে ৮ বিভাগ জুড়ে প্রোডাকশন ওরিয়েন্টেড ফিল্মমেকিং ওয়ার্কশপ করা। যে ওয়ার্কশপগুলোর লক্ষ্য দুইটা-
১. প্রতি বিভাগে দশ জন করে প্রতিশ্রুতিশীল ফিল্মমেকারকে হাতে কলমে কাজ শেখানো। এই ওয়ার্কশপ পরিচালনা করবেন আটজন ফিল্মমেকার।
২. এই আট ফিল্মমেকার একই সাথে একটা করে ৪০ মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবি বানাবেন যে ছবিগুলো জুলাই মাসে রিমেম্বারিং মুনসুন রেভুলেশন ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষ্যে দেখানো হবে। পরবর্তীতে টেলিভিশন এবং অনলাইনেও দেখানো হবে এগুলো। এই ছবিগুলোতে সহকারী পরিচালক হিসেবে হাতেকলমে কাজ শেখার সুযোগ পাবেন ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণকারীরা।
এই আটটা ওয়ার্কশপ কারা নিবেন এবং ভিজ্যুয়াল কনটেন্টগুলো কারা বানাবেন এটা নির্বাচন করার জন্য সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে। আট বিভাগের ভাই-বোনেরা, চোখ রাখুন ওয়ার্কশপের ঘোষণার জন্য। তার আগে চোখ রাখুন, আপনার বিভাগে কে আসছেন জানতে। আশা করি, সার্চ কমিটি দ্রুত বসে নির্বাচন সম্পন্ন করবেন।
আমি তাকিয়ে আছি আজ থেকে পাঁচ বছর পরে যেন এটা শুনতে পাই, কোন একজন ফিল্মমেকার হয়তো এসে আমার সঙ্গে দেখা করে বলবেন- ভাই, আমি একটা ছবি বানিয়েছি। আপনারা যে একটা ওয়ার্কশপ করেছিলেন অমুক বিভাগে, আমি ওইটাতে পারটিসিপেট করেছিলাম।
আমি বিশ্বাস করি যে ৮০ জন ওয়ার্কশপ পার্টিসিপেন্টকে নিয়ে ৮ জন ফিল্মমেকার ওয়ার্কশপ করবেন, এই ৮০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন নিজেরা ফিল্মমেকার হয়ে দাঁড়াবেন। এই আগুনটাই আমরা ছড়িয়ে দিতে চাই।
পাশাপাশি এটাও চাই ৮ জন ফিল্মমেকার যে ৮টা ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট বানাবেন সেই কন্টেন্টগুলো যেনো দেশে এবং দেশের বাইরে আমাদের সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়। সবাইকে ধন্যবাদ। অনওয়ার্ডস অ্যান্ড আপওয়ার্ডস।