চলতি মাসের ১৮ তারিখ রাজধানীর মহাখালীর একটি কনভেনশন হলে জরুরি সভা ডাকে টেলিভিশন নাটকের অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন ‘অভিনয়শিল্পী সংঘ’। সেখানে বর্তমান কমিটিকে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত রেখে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সংস্কার কমিটি’ গঠন করা হয়।
বরেণ্য অভিনেতা তারিক আনাম খানকে এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এ অভিনেতাকে প্রধান করা হলেও অন্তর্বর্তী সংস্কার কমিটির অন্য সদস্যদের নাম জানানো হয়নি বিশেষ সাধারণসভায়। এ কমিটি গঠনেও নেতৃত্ব দেবেন তারিক আনাম খান।
তারিক আনাম খান বলেন, ‘সংস্কারের পক্ষেই সবার মত ছিল। আমাদের প্রথম দায়িত্ব হলো শিল্পীদের কী কী প্রয়োজন, সেটি খুঁজে বের করা। আমাদের কার্যক্রম সবার জন্য খোলা থাকবে। যে কোনো সদস্য এসে বলতে পারবেন কী সংস্কার প্রয়োজন। সংগঠনের বাইরের কেউ যদি কিছু বলতে চান, তাদের কথাও আমরা শুনব। সবার মতামত নিয়েই সংস্কার প্রস্তাব সাধারণসভায় উপস্থাপন করা হবে।
বিশেষ সাধারণসভার আগে যেসব সংস্কারের কথা বলেছিলেন সংস্কারকামী শিল্পীরা, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— অভিনয়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি এবং অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ, কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, নতুন করে রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম চালু, তিন ধরনের কোর্সের ভিত্তিতে ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করা, পেশাদার কার্ডের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, রিফরমেশন অ্যাক্ট চালু, অভিনয়শিল্পীদের কাজের সুষ্ঠু, নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করা, শিফট সিস্টেম, ওভারটাইম চার্জ, ডেট ক্যানসেলেশন চার্জ চালু, ন্যূনতম পারিশ্রমিক নির্ধারণ ইত্যাদি।
এ বিষয়ে শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই সংগঠন নিয়ে নানা ধরনের কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল। অনেকেই শিল্পী সংঘের সংস্কারের কথা বলছিলেন। আমাদের মনে হয়েছিল, সবার সঙ্গে কথা বলা জরুরি। এ কারণেই বিশেষ সাধারণসভার আয়োজন করা। বৃহত্তর একটা অংশ বলেছে— বর্তমান কমিটির পদত্যাগের প্রয়োজন নেই। আবার সংস্কারের কথাও বলেছে তারা। সবার সব কথা শুনে শ্রদ্ধেয় তারিক আনাম খানকে প্রধান করে ‘অন্তর্বর্তী সংস্কার কমিটি’ নামে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও চারজন শিল্পীকে যুক্ত করে আগামী চার মাস সংস্কারের জন্য কাজ করবেন ও নির্বাহী দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর নির্দিষ্ট সময় দেখে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।’
এ বিষয়ে শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান বলেছেন, তারিক আনাম খানের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী কমিটির মেয়াদ হবে চার মাস। এই সময়ের মধ্যে সংগঠনের প্রয়োজনীয় সংস্কার নিয়ে কাজ করবে তারা। কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা করবে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির। চার মাস পর সাধারণ সভায় সংস্কার প্রস্তাব পাস করার পাশাপাশি গঠিত হবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের পর বিজয়ী সদস্যদের কাছে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন বর্তমান কমিটির সদস্যরা। বর্তমান কমিটি পদত্যাগ না করলেও এই সময়ের মধ্যে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না, কেবল দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করবে।