‘আমরা বোকা, কমেন্টযোদ্ধাদের মতো চালাক নই’

বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে লক্ষ্মীপুরে গিয়েছিলেন ছোট পর্দার অভিনেতা খায়রুল বাসার।

সামাজিক মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রমের ছবি প্রকাশ করেন তিনি। সেখানে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন সেচ্ছাসেবক। সেই দলে ছিলেন একজন কিশোর ও একটি মেয়ে।

সেই ছবিটি সামনে আসতেই বিপাকে পড়েন অভিনেতা। ছবিটি দেখে একজন লিখেছেন, এত লোক নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়ার প্রয়োজন কী? কেউ আবার লিখেছেন, বন্যার্তদের সহায়তা নয়, যেন পিকনিক করতে গেছেন তিনি।

আবার কিশোর ছেলেটির বিষয়ে একজন লিখেছেন, বাচ্চা এই ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হলো কেন? আবার মেয়েটাকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ের আপত্তিও লক্ষ্য করেছেন খায়রুল বাসার।

এর জবাব দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন তিনি। খায়রুল বাসার বলেন, ছবিতে যাদের দেখা গেছে, তাদের বেশিরভাগই স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী। লক্ষ্মীপুরের পথঘাট না চেনার কারণে টিমের সঙ্গে তাদের যুক্ত করা হয়েছিল। বাচ্চা ছেলেটাও এক স্বেচ্ছাসেবীর ছোট ভাই, সে নিজেও ওই এলাকার সন্তান।
এরপর পিকনিকের মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুরের যেখানে গেছেন, মানুষ ভালোবেসে তাদের খাবার দিয়েছেন। সেটাই ভাগ করে সবাই খেয়েছেন। সেই ছবি দেখে অনেকে পিকনিক বলে মন্তব্য করছেন।
তাদের দলে থাকা মেয়েটির বিষয়ে বাসার বলেন, মহিলাদের প্রয়োজনীয় নানা কিছু সরবরাহে মেয়েটা হেল্প করেছে। তাকে না নিয়ে একজন কমেন্টযোদ্ধাকে নিয়ে যাওয়ার মতো সুবুদ্ধি আমাদের ছিলো না। আমরা বোকা, কমেন্টযোদ্ধাদের মতো চালাক নই। কমেন্টযোদ্ধারা জানেন একটা কমেন্ট করলেই বড় দায়িত্ব সম্পন্ন হয়।
অভিনেতা আরও বলেন, ‘বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের চোখে-মুখে আমাদের প্রতি যে ভালোবাসা দেখেছি, এতটা ভালোবাসা গ্রহণের সামর্থ্য নিয়ে যাইনি হয়তো। আমরা বরং ভালোবাসা নিয়ে ফিরেছি। কোমরসমান পানিতে ভেসেও কেউ কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছেন, “দুইটা ভাত আর শাক রান্না হইছে, তোমরা কেউ খেয়ে যাও; তোমাদের মুখ শুকনা লাগতেছে।” এই কথার কাছে আপনাদের বাজে কথা কিচ্ছু না।’
যারা এই ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন খায়রুল বাসার। আরও জানিয়েছেন, অভিনেত্রী সামিরা খান মাহির উদ্যোগেই লক্ষ্মীপুরে টিম নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বন্যা-পরবর্তী সময়ে বন্যার্তদের পুনর্বাসনে সহায়তা করতে আবারও দুর্গত এলাকায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।
বাসার বলেন, যেসব সংগঠন এবং যারা ব্যক্তি উদ্যোগে বানভাসি মানুষের কাছে সামান্যটুকু পাঠিয়েছেন; তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আপনাদের প্রতি সাধুবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। সবার বিপদে সবাই পাশে এই সুন্দরেরর চর্চাই করবো আমরা।