ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা একটি পোস্টের স্ক্রিনশট মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত থেকে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে দেখা যাচ্ছে। একটি পক্ষ এই পোস্ট অভিনয়শিল্পী ও মডেল শবনম ফারিয়ার বলে দাবি করছে। তবে ফারিয়া জানিয়েছেন, তিনি এ ধরনের কোনো পোস্ট করেননি, বিশেষভাবে রাজনীতিবিষয়ক। তার ভাষ্যে, পোস্টটি সম্পূর্ণ এডিটেড।
শবনম ফারিয়ার নামে ফেসবুকে যে স্ক্রিনশট ছড়িয়েছে, তাতে ঠিক এ রকম লেখা রয়েছে, ‘আজকে কিছু কথা বলতে চাই। হয়তো আপনাদের ভালো নাও লাগতে পারে। কিন্তু আমি নিরুপায়। আর চুপ করে থাকতে চাই না। ৫ আগস্ট আমরা যেই আশা নিয়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতার জন্য উদ্যাপন করেছিলাম, সত্যিই কি আমরা সেই স্বাধীনতা পেয়েছি? সেই আমরা তো ছাত্র-জনতার পক্ষে, সারা বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে রাস্তায় নেমেছিলাম। আমরা তো কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে রাস্তায় নামিনি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নামে তাহলে কি আমাদের ধোঁকা দেওয়া হলো? একজন সমন্বয়ককে দেখলাম স্বীকার করে নিল, বিপ্লব সফল করতে মেট্রোরেলে আগুন দেওয়া, পুলিশ হত্যা এসব তাদের পূর্বপরিকল্পিত ছিল। আমার তো এখন সন্দেহ হচ্ছে, এত এত ছাত্র নিহত হলো, বারান্দায়, বাসার ছাদে নিষ্পাপ শিশুগুলো হত্যার শিকার হলো, এসব কি সত্যিই পুলিশের গুলিতেই হয়েছিল?
নাকি দেশবিরোধী কোনো অপশক্তির চক্রান্ত ছিল এগুলো? আজকের পরিস্থিতিতে আমরা কথা বলতে পারছি না। সামান্য ফেসবুকের একটি পোস্ট দুই–তিনবার কাটাছেঁড়া করতে হয়। শিল্পকলা একাডেমিতে আমার কলিগদের ওপর আক্রমণ করা হলো। এসব নিয়ে অনেকেই কথা বলতে চাচ্ছে, কিন্তু মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। আজ আমরা যাদের স্বৈরাচারী বলছি, তারা সত্যিই কি স্বৈরাচারী ছিল? গত ১৫ বছরে কখনো তো আমাকে কোনো পোস্ট ডিলিট করতে হয়নি। কেউ জয় বাংলা ধ্বনি দিলে তাকে নির্বিচার মারা হচ্ছে। জয় বাংলা তো শুধু আওয়ামী লীগের স্লোগান না। এটা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকলের স্লোগান।’
ভাইরাল সেই স্ক্রিনশটটি শবনম ফারিয়ার নজরে আসার পর ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমি গত ৩ দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। আমি কোনো স্ট্যাটাস পোস্ট করিনি কোনো বিষয়ে। বিশেষভাবে রাজনীতি বিষয়ক! এই পোস্ট সম্পূর্ণ এডিটেড। এইটার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আপনাদের অবস্থা এত খারাপ যে এখন এডিট করে অন্য দের নামে পোস্ট চালায় নিজেদের কথা বলতে হচ্ছে। আমি এই পোস্ট দিয়েছি ভেবে যারা খুশি তারা প্লিজ খুশি হইয়েন না। আবার লিখছে ১৫ বছরে নাকি কোনো পোস্ট ডিলিট করতে হয় নাই ! গত ১৫ বছরে কয়েক হাজার পোস্ট ডিলিট করতে হয়েছে!’
গত ১৫ বছরে স্ট্যাটাস দিলে কী হতো তার উল্লেখ করে অভিনেত্রী লেখেন, ‘স্ট্যাটাস দেওয়ার ৫ মিনিটে কল চলে আসতো, আপা ডিলিট করেন, সমস্যা হবে।অন্যদের মতো তেল মারি নাই দেখে কোনো সুযোগ-সুবিধাও পাই নাই! আমার আলোও আসে নাই। আর এমন কোনো স্টেটমেন্ট দিলে সেইটা রাখার সাহসও রাখি।’