‘একজন খুনিকে আতিথ্য করা মানুষের অনুভূতিতে আঘাতের শামিল’

শিক্ষার্থী ও সাধারণত জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে শেখ হাসিনার ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন তলানিতে। এরইমধ্যে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশন কার্যালয়ে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এবার দুই দেশের বৈরিতা নিয়ে কথা বললেন নির্মাতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাংস্কৃতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া দীর্ঘ এক পোস্টে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ফারুকী। তিনি শুরুতেই লিখেছেন, হাসিনা অধ্যায় শেষ হওয়ার বাস্তবতা মেনে নেয়ার সময় এসেছে ভারতের। সেই অধ্যায় বাংলাদেশের মানুষ চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে। ভারতীয় বন্ধুদের বোঝা উচিত, গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত একজন খুনিকে আতিথ্য করা বাংলাদেশি মানুষের অনুভূতিতে আঘাতের শামিল।

সাংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, এমনকি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো সব বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অথচ, এ অবস্থায় বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের ভিত্তি গড়তে পারতো ভারত, যা হতো বুদ্ধিদীপ্তের পরিচয়।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু মানুষ ভারতীয় মুসলমান ও খ্রিস্টানদের থেকে বেশ ভালো রয়েছেন বলেও উল্লেখ করেছেন নির্মাতা ফারুকী। এ ব্যাপারে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার অনেক ভাবছে। প্রকৃতপক্ষে আগের সরকারের তুলনায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সংক্রান্ত ঘটনা কমে গেছে।

তিনি আরও লিখেছেন, দেশের প্রকৃত দৃশ্য তুলে ধরার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে সব শীর্ষ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের স্বাগত জানাই। এরইমধ্যে বিবিসি, আল জাজিরার মতো খ্যাতিমান সংবাদমাধ্যমগুলো ভারতীয় মিডিয়ার ভুয়া খবরগুলো নজরে এনেছে।

সবশেষ এ উপদেষ্টা লিখেছেন, ভারতীয় বন্ধুদের মনে রাখা প্রয়োজন যে, তারা এমন একজন মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে, যিনি একজন অত্যাচারী ছিলেন। যিনি কিনা টানা তিনবার নির্বাচনে ভোটের অধিকার ছিনতাই করেছে, ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। নিজের মতের বিরুদ্ধে যাওয়া হাজারও মানুষকে হত্যা করেছেন। গত জুলাইতে যেই সংখ্যা দেড় হাজার ছিল। এছাড়া অনেক মানুষকে গুম করা হয়েছে, যারা এখনো ফিরেননি। তাহলে ভারত কেন আশা করে যে, তাকে (হাসিনাকে) ভালোবাসব আমরা। ভারতীয়রা কি আশা করে যে, হিটলারকে ভালোবাসবে জার্মানরা?’

Leave a Reply

Your email address will not be published.