জীবনের প্রথম ইনকাম কত? জানালেন শ্রাবন্তী

চলচ্চিত্র দুনিয়ার সিংহভাগ তারকাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বিভিন্ন ধরনের গল্প। কারও কারও জীবন থেকে বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ে না। এমন তারকাদের তালিকায় রয়েছেন টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়।

ব্যক্তিগত জীবনের নানান ধরনের মুখরোচক গল্প নিয়ে শ্রাবন্তী বার বার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। তার জীবনে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলো বার বার বিয়ে। এছাড়া রাজনৈতিক জীবনে পা দিয়েও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি তার। তবে জীবনের যতোই চড়াই-উতরাই আসুক না কেন, কখনো তিনি শোবিজ ছেড়ে যাননি। ১৩ আগস্ট ছিল শ্রাবন্তীর জন্মদিন। দেখতে দেখতে এবার ৩৬ বছরে পা দিলেন তিনি। জন্মদিনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনে বিশেষ সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন শ্রাবন্তী।

সাক্ষাতকারের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:

প্রশ্ন: জন্মদিনের শুভেচ্ছা, নায়িকাদের বয়স জিজ্ঞেস করা কি উচিত?

শ্রাবন্তী: (একগাল শ্রাবন্তীসুলভ প্রাণখোলা হাসি) ধন্যবাদ। বয়স নিয়ে আমার কাছে শুধুই একটা সংখ্যা। আমার বয়স সবাই জানে। আসলে আমি লুকিয়ে রাখায় বিশ্বাসী নই। আমি কবে মা হয়েছি, কবে কাজ শুরু করেছি সবটাই তো সকলের চোখের সামনে। আমি কত ভাল নিজেকে মেনটেন করতে পেরেছি, সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: জীবনের প্রথম উপার্জন কত টাকা ছিল?

শ্রাবন্তী: সালটা ১৯৯৬। তখন আমি দিনে ২০০ টাকা পেতাম। একটা ছবি করেছিলাম। ১২ দিনের কাজ ছিল। আড়াই হাজারও পাইনি!

প্রশ্ন: আর এখন?

শ্রাবন্তী: (হেসে) সেটা সিক্রেট থাকুক। হ্যাঁ, ভাল আছি, এখন চালিয়ে নিচ্ছি। তবে আমার অনেক দায়িত্ব রয়েছে। কারণ আমার পরিবারে একমাত্র রোজগেরে সদস্য আমি। তাই একটু বুঝেশুনেই চলতে হয়।

প্রশ্ন: আপনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বোধহয় সকলের বাড়তি কৌতূহল…।

শ্রাবন্তী: তার মানে আমি সকলের থেকে আলাদা। আমার মধ্যে নিশ্চয়ই কিছু আছে, তাই আলোচনা হয়। আমি যদি সাধারণ মেয়ের মতো অফিস করতাম, সংসার করতাম, তা হলে তো আলোচনা হত না। তবে আমি ফেসবুকে এ সব দেখে হাসাহাসি করি।

প্রশ্ন: সব সময় এত সমালোচনা, কটাক্ষ সামলান কী করে?

শ্রাবন্তী: আগে খুব কষ্ট হত। ভাবতাম, আমার জীবনে খারাপ কিছু ঘটেছে বলেই আমি ‘সফ্‌ট টার্গেট’! এখন কিছু যায়-আসে না! সমাজমাধ্যমে নেতিবাচক খবর লোকে বেশি দেখে। আমি কাজ করব, নিজের কর্মফল পাব, ব্যস!

প্রশ্ন: মন ভাঙলে শ্রাবন্তীর ঘুরে দাঁড়ানোর মন্ত্র কী?

শ্রাবন্তী: একা এসেছ, একাই যেতে হবে। নিজেকে ভালবাসো। যাঁরা শর্তহীন ভাবে ভালবাসেন, তাঁদের সেই ভালবাসা ফিরিয়ে দাও। ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে লাভ নেই। তাই আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেওয়া একেবারেই অমূলক। জীবনে এগিয়ে যাওয়াটা লক্ষ্য হওয়া উচিত।

প্রশ্ন: প্রায় ২৫ বছর এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। এতগুলো বছরে বন্ধুর সংখ্যা বাড়ল না কি শত্রুর?

শ্রাবন্তী: যতই আমার সঙ্গে নেতিবাচক ঘটনা ঘটুক, আমি মানুষটাই খুব পজ়েটিভ। আমি বুঝতে পারি না, কে আমার শত্রু। সকলেই আসলে আমার সামনে অন্তত ভাল ব্যবহার করে। হয়তো সেই কারণেই বুঝি না। তবে, আমার স্কুলের বন্ধুদের একটা গ্রুপ আছে। সেটা আমার একান্ত আপন। ইন্ডাস্ট্রির কেউ নেই সেখানে। ইন্ডাস্ট্রির কেউই ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ নয়।

প্রশ্ন: জীবনে অনেক ওঠাপড়া দেখেছেন। নিজেকে শক্ত রাখেন কী ভাবে?

শ্রাবন্তী: লড়াকু মনোভাবটা পরিবারে রয়েছে। বাবা সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন, দাদু স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তাই মনের জোরটা বেশি। যাই হোক না কেন এগিয়ে যাব। আমার হৃদয়টা নরম। আমাকে ‘ইমোশনাল ফুল’ বলা যেতে পারেই। শিল্পীরা আবেগপ্রবণ হয়, তবে আমার একটু বেশি। লোকে আমাকে সারদা মা বলে। এত দয়া তাই জন্য। কিন্তু যাই হয়ে যাক, আমাকে শক্ত থাকতে হবে। কারণ আমি ‘সিঙ্গেল মাদার’। অনেক দায়িত্ব আছে। আমার পরিবারের ‘ছেলে’ আমি।

প্রশ্ন: শ্রাবন্তী কি বিয়ে করে নতুন করে জীবন শুরু করতে চান?

শ্রাবন্তী: এখনও বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। বন্ধুবান্ধব আছে। আমি আর প্রেমে পড়তে বা বিয়ে করতে চাই না। কাজই আমার প্রেম।