বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একদফা দাবি মেনে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজপথে ছিলেন তারকারাও। তবে সরকার পতনের পর এরই মধ্যে কিছু জায়গায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এমন খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিল্পীরা। তারা এসব থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়ে তারকারা বলছেন, কেউ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে লিখেছেন, মনের কথা লিখতে পারছি, এটাই স্বাধীনতা।
ঢালিউড তারকা সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, ‘ভাই রে ভাই, আমরা কোনো দেশনায়কও চাই না! আমজনতা হয়ে যারা আমজনতার জন্য কাজ করবে, তাদেরকেই দেশের নেতৃত্বে দেখতে চাই। এমন নায়কগিরির অতীত ইতিহাসও দেশের মানুষের দেখা আছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই যে মনের কথাগুলো এভাবে অকপটে লিখতে পারছি, এটাই আমার কাছে স্বাধীনতা।’
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মানুষের ধর্ম আলাদা হতে পারে, মতামত আলাদা হতে পারে, রাজনৈতিক অবস্থান আলাদা হতে পারে। কিন্তু তার সুযোগ অন্য কোন কুচক্রী মহলকে দেওয়া যাবে না। তাই আপনার বন্ধু-কলিগদের পাশে থাকুন নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘স্বাধীনতা মানে দায়িত্বশীলতা। নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয়। ন্যায়বিচার ও সাম্যের দেশ গড়া। আমাদের সন্তানদের, ছাত্রদের ত্যাগের কথা যেন ভুলে না যাই।’ আরেক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সকল ধর্মীয় উপাসনালয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদ আমাদের রক্ষা করতে হবে। এতদিনের আন্দোলন আর রক্তের বিনিময়ে আমরা ধ্বংসযজ্ঞ, সহিংসতা চাই না। ভুলে যাবেন না, ছাত্রদের এই আন্দোলনের নাম “বৈষম্যবিরোধী” আন্দোলন, সব বৈষম্য দূর করে গণতান্ত্রিক ও সাম্যের রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরির আন্দোলন। আজ বিজয়ের নামে ধ্বংসযজ্ঞ দেখে মনে হচ্ছে, এই আন্দোলন শেষ হতে অনেক দেরি আছে। যারা নাগরিকদের সম্পদ ও শিল্প ধ্বংস করছে, যারা মানুষের (সে যে কোনো ধর্ম, বর্ণ, পেশার মানুষই হোক না কেন) ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক, তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত থাকুক।’
অভিনেতা ইমতিয়াজ বর্ষণ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এই বিজয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফসল। এটা ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পর সংসদ ভবন, পিএম অফিস, গণভবনে এভাবে লুটপাট করতে দেওয়ার কোনো মানে খুঁজে পেলাম না। আশা করি, আমাদের দেশের শতভাগ লোক সভ্য আচরণ করবে। এটা নীতিনির্ধারকদের বোঝা উচিত ছিল। আমি মনে করি, এই আন্দোলনে এক নতুন সৃষ্টিশীল প্রজন্মের জন্ম হয়েছে, যারা সত্যি বলে। নতুন নতুন সংগীতশিল্পীর জন্ম হয়েছে, যারা গানে গানে প্রতিবাদ করে উদ্বুদ্ধ করে। এক অসাধারণ সময়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি আমরা। কিছু নির্বোধের হঠকারিতায় এই আন্দোলন যেন বিফলে না যায়, সেই প্রত্যাশা রাখি।’