বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের কালজয়ী অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক নায়করাজ রাজ্জাকের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (বুধবার)। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিজের জন্মস্থান কলকাতায় সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজ্জাকের মঞ্চ নাটকে হাতেখড়ি। ১৯৬৪ সালে নতুন জীবন গড়তে সপরিবারে বাংলাদেশে পাড়ি জমানো অসহায় রাজ্জাক কঠোর পরিশ্রম আর সংগ্রাম করে ‘নায়করাজ’ উপাধি লাভ করেন। ‘মুখ ও মুখোশ’ চলচ্চিত্রের পরিচালক আব্দুল জব্বার খানের সহযোগিতায় বাংলাদেশি ফিল্মে কাজ করার সুযোগ লাভ করেন তিনি।
১৯৬৬ সালে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তার অভিষেক। একই বছর জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে (লখিন্দর) অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম মুক্তি পায় রাজ্জাক অভিনীত ‘মানুষের মন’ ছবি। ছবিটি ব্যবসাসফল হয়। এ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে সূচনা ঘটে নায়ক রাজ্জাক যুগের। তার পর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রথম ছবি ওরা ১১জন, ছন্দ হারিয়ে গেল, অবুঝ মন ছবিতে অভিনয় করে রাজ্জাক হয়ে যান বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের আইকন।
প্রায় ৫০ বছরের অভিনয় জীবনে বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, জীবন থেকে নেয়া, অবুঝ মন, রংবাজ, ওরা ১১জন, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছটির ঘণ্টা, বড় ভালো লোক ছিল, ও আমার দেশের মাটিসহ প্রায় ৫০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৬টি চলচ্চিত্রের পরিচালক রাজ্জাকের মালিকানাধীন রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশনের ব্যানার থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের কয়েক দশকের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচিত রাজ্জাক মোট পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন।