১৯৮৯ সালে সাদিয়া ইসলাম মৌ প্রথম মডেলিংয়ে পা রাখেন। একটি শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনের জন্য সে সময় তাকে রেকর্ড ১ লাখ টাকা পারিশ্রমিকের চুক্তি করা হয়েছিল। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনিই বাংলাদেশের সর্বাধিক পারিশ্রমিক পাওয়া নারী মডেল। ৩৪ বছর ধরে শীর্ষ মডেল হিসেবে রাজত্ব করতে পারা একটি রেকর্ডই বটে।
কিভাবে এতগুলো বছর এই শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা সম্ভব হলো, সেই নেপথ্যের গল্পগুলোই সাদিয়া ইসলাম মৌ সম্প্রতি ঈদের বিশেষ আয়োজন ‘রাঙা সকাল’-এ বলেছেন। মাছরাঙা টেলিভিশনের নিয়মিত আয়োজন ‘রাঙা সকাল’-এর বিশেষ এই ঈদ পর্বটি প্রচারিত হবে ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল ৭টায়।
মডেল পরিচয়ের পাশাপাশি সাদিয়া ইসলাম মৌ একজন গুণী নৃত্যশিল্পী। ছোটবেলায় বাবার সাথে গানের অনুশীলনও করতেন তিনি। গানের চর্চা চালিয়ে গেলে হয়তো আজ সংগীতশিল্পী পরিচয়েও তাকে পাওয়া যেত। কারণ তার বাবা প্রয়াত সাইফুল ইসলাম ছিলেন জনপ্রিয় একজন সংগীতশিল্পী; ষাটের দশকে যাকে বলা হতো পূর্ব বাংলার ‘হেমন্ত’। আঁকাবাঁকা, বাদশা, আপনজন’সহ বেশকিছু ছবিতে প্লেব্যাকও করেছিলেন সাইফুল ইসলাম। ১৯৯৫ সালের ৩ জুলাই প্রচারিত হয়েছিল সাদিয়া ইসলাম মৌয়ের প্রথম নাটক ‘অভিমানে অনুভবে’। যদিও অনেকটা জোর করেই তাকে অভিনয়ে রাজি করানো হয়েছিল। এমনকি শুটিং শুরু হবার দিন সকাল বেলাতেও পরিচালক-নাট্যকার ফারিয়া হোসেনকে মৌ অনুরোধ করেছিলেন, তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে নেবার জন্য।
ঢাকাই সিনেমাতেও তারকা-নির্মাতাদের প্রায় সবাই মৌকে চেয়েছিলেন সিনেমার জন্য। বলিউডের ‘সাজান’ সিনেমার রিমেক ‘স্বজন’ সিনেমাতেও তিনি প্রস্তাব পেয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গ স্মরণ করিয়ে দেয়ার পর মৌ বলেন, ‘আমি যে ধরনের সিনেমা করতে চাই, সে ধরনের সিনেমা তখন অতটা হতো না। তবে এখন হচ্ছে। গল্পপ্রধান, অভিনয় করার মত চরিত্র পেলে অবশ্যই এখন সিনেমায় কাজ করবো’।
অভিনেতা মাহফুজ আহমেদ মৌ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মৌ অসাধারণ একজন মডেল বা নৃত্যশিল্পীই নন, তিনি দুর্দান্ত একজন অভিনেত্রী। চোখের কাজ, অভিব্যক্তি সব মিলিয়ে সাদিয়া ইসলাম মৌকে নিয়ে গুণী নির্মাতারা আরো বেশি নিরীক্ষা করলে আমরা অভিনেত্রী মৌয়েরও অনেক ভালো কাজ দেখতে পারতাম। মৌয়ের সততা, আন্তরিকতা, সময়ানুবর্তিতা, মেধা তাকে আরো অনেক দূর নিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস’।
‘রাঙা সকাল’-এর বিশেষ এই পর্বটি সঞ্চালনা করেছেন রুম্মান রশীদ খান ও লাবণ্য। প্রযোজনা করেছেন জোবায়ের ইকবাল।