ফিলিস্তিনিদের জন্য তারকাদের প্রার্থনা

পৃথিবী থেকে ফিলিস্তিনিশূন্য করার মিশনে নেমেছে ইসরায়েল। কোনোভাবেই থামছেই না তাদের বর্বরতা। মুহুর্মুহু বোমা হামলা চালিয়ে অসংখ্য নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের হত্যাযজ্ঞে নেমেছে ইসরায়েলি বাহিনী; রেহাই পাচ্ছে না নারী, শিশু থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সাংবাদিক ও উদ্ধারকর্মীরাও। এরই মধ্যে গত ২০ দিনেই ৫০০ শিশু হত্যা করেছে দখলদারবাহিনী।

গেল বছর ৭ অক্টোবর থেকে গাজা ভূখণ্ডে গণহত্যা চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি বাহিনীর সদস্যরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে এক হাজার ৩০৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদাররা।

ইসরায়েলের এই বর্বরতার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। আরব এবং বিশ্ব নেতাদের সমালোচনাও করছেন সাধারণ মানুষজন ও তারকারা। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক-নো ক্লাস’ কর্মসূচি চলছে। পাশপাশি প্রার্থনাও করা হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের জন্য।

এক ফেসবুক পোস্টে ঢালিউড মেগাস্টার শাকিব খান লিখেছেন, ‘গাজা শুধু একটি ভৌগোলিক নাম নয়; এটি যেন আজ নির্যাতিত মানুষের প্রতীক! দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কিছু করতে না পারা! তাদের (ফিলিস্তিনি) পাশে আছি- ভালোবাসা, সংহতি, আর শান্তির প্রত্যাশায়।’

শাকিব ছাড়াও গাজায় বর্বর হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। বিশ্ব নেতাদের সমালোচনা করে তিনি লিখেছেন, ‘দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি সেনারা ১৫ জন জরুরি চিকিৎসাকর্মীকে হত্যা করেছে। গাজায় যে নিষ্ঠুর আর হৃদয়হীন গণহত্যা ইসরায়েল চালিয়ে আসছে, এটা তারই অংশ। পৃথিবীকে তারা ফিলিস্তিনিশূন্য করার নিয়ত নিয়ে নেমেছে।’

জয়ার প্রশ্ন- বিশ্ববাসীর প্রতিবাদে ইসরায়েল ভ্রূক্ষেপ করবে না, সেটা জানি। কিন্তু বাকি বিশ্ব? বিশ্বের বড় বড় নেতারা? এভাবে বেশুমার শিশুহত্যা, নারীহত্যা, গণহত্যা সবার চোখের সামনে চলতে থাকবে?

দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী আরও লিখেছেন, ‘মানুষের হৃদয়ের ওপর থেকে পর্দা সরুক। ফিলিস্তিনিরা মানুষের মতো বাঁচার সুযোগ পাক।’

জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর লিখেছেন, ‘বিদায় রাফাহ্-গাজার জান্নাতি শহীদেরা। শ্রেষ্ঠ ধর্মের অনুসারী আর তাদের নিকৃষ্ট শাসকরা আনন্দে থাকুক জ্বলন্ত জমিনের দোজখে।’

চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, ‘আমি যখন এই পোস্ট লিখছি ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কী মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটা, এই দেশটাকে বাঁচাতে? ফিলিস্তিনের এই ধ্বংসাবশেষের দায় কি আমরা কেউ এড়াতে পারব? ফিলিস্তিনের জন্য আমার মনের কান্না কখনো থামাতে পারিনি। যখন “জংলি”র গল্প লেখা হচ্ছিল তখনও পাখির জায়গায় আমি বারবার ফিলিস্তিনি শিশুদেরই কল্পনা করতাম। আমরা কি শিশুদের জন্য একটা সুন্দর পৃথিবী উপহার দিয়ে যেতে পারব না? যখন যুদ্ধবিরতি চলছিল তখনও আমি শান্তি পাচ্ছিলাম না। শুধু মনে হতো, এই বিরতি কতক্ষণের? কতক্ষণ এই মানুষগুলো বাঁচবে আসলে?’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই যে ঈদের পরপরই তাদের ওপর নরক নেমে আসল, তার দায় কি এই পৃথিবী নেবে না? এই বিশ্ব লিডারস, ইসলামিক স্কলারস, নোবেল লরিয়েটস, সাধারণ মানুষ, আমরা কেউ কি এড়াতে পারব এর দায়? আল্লাহ, তুমি জান্নাতের দরজা খুলে দাও। এই পৃথিবী আর গাজাবাসীর জন্য নয়। আমরা পারিনি, আমরা পারলাম না।’

অভিনেত্রী তমা মির্জা গাজায় ইসরায়েলি হামলার একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এটা গোটা মুসলিম দেশের মুসলমানদের শাহাদত এর চিত্র!’

সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আবারও লিখেছেন গান। আর সেই গানের কথা তিনি শেয়ার করেছেন ফেসবুকে। সেখানে লেখা- ‘গাজা কোনো দিন শেষ হয়ে যাবে না তো, আমরা সবাই গাজা হব আজ থেকে। সেই যাত্রাই আজ থেকে হোক শুরু, পৃথিবীটা যাক প্যালেস্টাইন হয়ে…।’

অভিনেতা আব্দুন নূর সজল লিখেছেন, ‘মনুষ্যত্ব কোথায়? এসব কি কোনো মানুষের কাজ হতে পারে? প্লিজ সাপোর্ট গাজা।’

অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান লিখেছেন, ‘দেশ-বিদেশের সব অসহায়-নির্যাতিত মানুষের জায়গায়, সব নিপীড়িত জনপদে নিজেকে, নিজের পরিবারকে কল্পনা করে আতঙ্কিত হই প্রতিনিয়ত। যতই আশার আলো খুঁজতে যাই না কেন, জানি কখনোই আর শান্ত হবে না এই নষ্ট পৃথিবী। তবু আশা রাখি মনে, ছোটবেলা থেকে দেখে আসা ফিলিস্তিনবাসীর সংগ্রাম সফল হবে কোনো এক দিন।’

অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি লিখেছেন, ‘মানুষ সভ্যতার জন‍্য জ্ঞান অর্জন করে সবচেয়ে বেশি মানুষেরই ক্ষতি করেছে! আহা জীবন!’ আর অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম লিখেছেন, ‘মানুষ না, যেন নিষ্প্রাণ পুতুল।’

চিত্রনায়িকা আঁচল আঁখি লিখেছেন, ‘যত দিন এই দুনিয়া আছে, তত দিন গাজা ও ফিলিস্তিন থাকবে ইনশাআল্লাহ। এই যুদ্ধে ফিলিস্তিন আবারও বিজয় লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।’