নারায়ণগঞ্জের একটি হার্ডওয়্যারের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন আলী হাসান। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৮ মাস আগে বহু বছরের স্মৃতিবিজড়িত দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হন তিনি।
ব্যবসায় যখন লোকসান চলছিল, তখন দোকানে বসেই ‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ নিয়ে গান লেখেন আলী হাসান।
সেই গান নিজে সুর করে ফেসবুকে ছাড়ার পর পর এটি ভাইরাল হয়ে যায়। ফেসবুকের বিভিন্ন পেজে ও গ্রুপে গানটি আলোড়ন তুলেছে। এরই সঙ্গে রাতারাতি পরিচিতি এনে দিয়েছে হাসানকে।
এবার হাসানকে দিয়েই গানটি প্রকাশ করেছে অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি সিরিজ।
শুক্রবার প্রকাশিত সেই গানের ভিডিওতে দেখা গেছে গাইছেন আলী হাসান।
গানটা লিখে শেষ করতে কয়েক মাস লেগেছিল বলে জানালেন আলী হাসান। এতে তার জীবনযুদ্ধে লড়াইয়ের কথা প্রকাশ হয়েছে। আর বর্তমান বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মন্দার বাজারে গানটি হৃদয় ছুঁয়েছে শ্রোতাদের।
ভাইরাল হওয়ার পেছনে এমনটাই কারণ বলে মনে করেন হাসান।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলী হাসান বলেন, হার্ডওয়্যারের দোকানটি আব্বা চালাতেন। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমি ব্যবসার হাল ধরলাম। কিন্তু হাল আর ধরা হলো কই। কী বিপদে পড়ি! ব্যবসার পরিস্থিতি এত খারাপ জানতাম না। চারিদিকে বাটপারি আর চিটারিতে ভরা। হালাল ব্যবসা করা যায় না। ব্যবসা হয়ে গেছে দুই নম্বর। সুদের ব্যবসা এসে দুধের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।’
প্রতিকূল পরিবেশে আর টিকতে না পেরে পারিবারিক ব্যবসাটি বন্ধ করতে বাধ্য হন আলী হাসান।
এরইমধ্যে ‘ব্যবসার পরিস্থিতি’ গানটি লেখেন তিনি।
গানটি ভাইরাল হওয়ার প্রসঙ্গে হাসান বলেন, আসলে ভাইরালের জন্য গান লিখিনি বা গাইনি। আমি শুধু নিজের পরিস্থিতি আর বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র। দেড় বছর আগে আমার দোকানে বসেই গানটি লিখেছিলাম।’
ব্যবসায়ী হলেও র্যাপ গান দারুণ গাইতে জানেন আলী হাসান। ২০১০ সালে একটি র্যাপ গান দলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। বেশ কয়েকটি কনসার্টে গান করেছেন তিনি। খাসবাংলা নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ‘ফকিন্নি’ ও ‘ধর মার’ শিরোনামে দুটি র্যাপ গান প্রকাশ করেছেন তিনি।
হাসান জানালেন, মাস তিনেক আগে গানের রেকর্ডিং করেছেন। এর শুটিং হয়েছে নারায়ণগঞ্জের আদর্শনগরে এক বন্ধুর দোকানে। গানে বিক্রেতার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
গানে আলী হাসানের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন সাদি, মানাম, আমিন আলী, উদয়, রাকিব হাসান, মারুফ, সিয়াম হাওলাদার ও রিজন। ভিডিও পরিচালনা করেছেন নাসিমুল মোরসালিন স্বাক্ষর। ভিডিওর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ইশা খান দূরে।
পরে অডিও-ভিডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি সিরিজের কাছে গান বিক্রি করেছেন হাসান।