ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে ‘ধর্ষণের’ অভিযোগ উঠেছে। সুপারস্টারের বিরুদ্ধে সহপ্রযোজককে ধর্ষণের এই অভিযোগ তুলেছেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার দৃশ্যধারণের সময় এক নারী সহপ্রযোজককে ‘ধর্ষণ’ করেন শাকিব খান। সেই অভিযোগপত্রে তিনি এ-ও জানান, ২০১৮ সালে নাকি অস্ট্রেলিয়া পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন শাকিব।
ঘটনার পাঁচ বছর হয়ে গেলেও এ বিষয়ে এতদিন কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে সাম্প্রতিক অভিযোগ ইস্যুতে বিষয়টি টক অব দ্য ইন্ডাস্ট্রিতে পরিণত হয়েছে।
প্রতিক্রিয়ায় শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই প্রযোজকের বিরুদ্ধে মামলা করতে গুলশান থানায় গিয়েছিলেন শাকিব। তবে পুলিশ তার মামলাটি নেয়নি। বরং পরামর্শ দিয়েছে— আদালতে গিয়ে মামলা করতে। সেই মোতাবেক আদালতে যাবেন অভিনেতা।
এদিকে শাকিবের অস্ট্রেলিয়া ইস্যুতে মুখ খুলেছেন তার সাবেক স্ত্রী বুবলী। ‘সুপার হিরো’ ছবির নায়িকা হিসেবে তিনিও এ ঘটনায় প্রাসঙ্গিক। শাকিবের সঙ্গে তিনিও অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন শুটিংয়ে।
এতদিন পর এ ইস্যুটি সামনে আসায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন বুবলী। জানতে চাচ্ছেন, এত অভিযোগ আগে কোথায় ছিল? সেই সঙ্গে মধ্যরাতে শাকিবের হোটেলে ওই নারী কী করছিলেন বলেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বুবলী তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘শাকিব খান একজন অভিনয়শিল্পী যে কিনা প্রায় ২৪ বছর এই বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির জন্য কাজ করেছেন, অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন, অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সিনেমা নিয়ে ভেবেছেন। হঠাৎ করে বিভিন্ন ধরনের ইস্যু এনে তাকে নিয়ে নানান বিতর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
এ সময় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ও শুটিং চলাকালীন কিছু ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘অনেক বছর আগের অপারেশন অগ্নিপথ নামের একটি সিনেমার শুটিং চলাকালীন শাকিব খান এর ব্যাপারে বিস্তর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেকে প্রডিউসার দাবি করে এক ব্যক্তি তাকে নিয়ে নানান অভিযোগ করছেন। আচ্ছা শুটিং চলাকালীন এতো এতো অভিযাগ যখন টের পেয়েছিলো উনারা, তাহলে কেনো তখন তাকে বাদ দেয়া হলো না? সমিতিগুলোতে অভিযোগ করা হলো না? দু-পক্ষের কথা শোনা হলো না?।’
তারপর ২০১৬ সালে অস্ট্রলিয়ায় শাকিবের জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘২০১৬ সালের অস্ট্রেলিয়ায় অপারেশন অগ্নিপথ শুটিং এর পর ২০১৮ সালে শাকিব খান তার সুপার হিরো নামের আরেকটি সিনেমার শুটিং সম্মানের সাথে প্রায় ২০ দিনে অস্ট্রেলিয়া থেকে শেষ করে আসেন। উনি যদি কোনো ব্যাপারে গিল্টি থাকতেন তাহলে তো অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ তাকে তখন শুটিং এর অনুমতই দিতো না। শাকিব খান নিজেও অস্ট্রেলিয়া যেতেন না।’
এ সময় অভিযুক্ত সেই নারী মধ্যরাতে শাকিবের হোটেলে কী করছিলেন প্রশ্ন তুলে আরও লেখেন, ‘মধ্যরাতে তার হোটেল রুমে নারী সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে এখন বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো মধ্যরাতে তার হোটেল কক্ষে তিনি কি করছিলেন? সেদিন কি তার বা তাদের উদ্দেশ্য ছিল? এছাড়া এতো বছর কেনো ওসব ঘটনা নিয়ে সেই নারী প্রকাশ্যে কথা বললেন না! এখন কেনো এই প্রডিউসার দাবি করা ব্যক্তি অস্থির হয়ে গেলেন? আর দেশে হোক বা বিদেশে! যে কেউ যে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে, খাতায় নাম উঠতেই পারে, কিন্তু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, উভয় পক্ষের প্রমানাদি নিয়ে।’
এরপর বুবলী তার স্ট্যাটাসের একদম শেষের দিকে আরও যুক্ত করেন, ‘কথা হলো, হঠাৎ এতো অভিযোগের ভান্ডার কেনো? কি চাচ্ছে? শিডিউল? মুভি শেষ করে দেয়া? আমার জানামতে শাকিব খান অপারেশন অগ্নিপথের শিডিউল কয়েকবারই দিয়েছেন, কিন্তু শুটিং হয়নি। এখনও যদি শিডিউল চাওয়া হয় সিনেমা শেষ করতে, উনি অবশ্যই শিডিউল দিবেন, কারন সে পেশাগত জায়গায় যথেষ্ট ডেডিকেটেড, তা নাহলে ২৪ বছর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারতেন না কারন একজন সফল শিল্পী একদিনে তৈরি হয়না।’
সবশেষ শাকিব খানকে নিয়ে চক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি তার স্ট্যাটাসটি শেষ করেন। যেখানে তিনি লেখেন, ‘কয়েক বছর ধরে দেখছি, একটা চক্র কিছুদিন পর পরই শাকিব খানকে নিয়ে ওঠেপড়ে লাগে। নানা চক্রান্তে মেতে ওঠে। বিষয়টা যেন এমন, তাকে হটিয়ে দিতে পারলেই আমরা রাজা। কিন্তু তার লাখো কোটি ভক্তরা কখনোই তা হতে দেয়নি। দিবেও না। সবসময়ই তারা তাকে আগলে রাখে। শক্তি দিয়ে এগিয়ে নেয়। মনে রাখবেন রাজা সবসময়ই রাজা। কিন্তু তার লাখো কোটি ভক্তরা কখনোই তা হতে দেয়নি। দিবেও না। সবসময়ই তারা তাকে আগলে রাখে। শক্তি দিয়ে এগিয়ে নেয়। ’