গত বছরের অক্টোবরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে তৈরি ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমা। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি হয় এই সিনেমাটি। দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেটের নির্মিত সিনেমা এটি। নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি টাকায় ৮৩ কোটি টাকা)।
সিনেমাটি মুক্তির পর থেকে নানা আলোচনা-সমালোচনা হলেও এর মান নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার সাহস পাননি। এখন সাবেক সরকারের পতনের পর সব অঙ্গণ নিয়ে যৌক্তিক প্রশ্ন তুলছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিনেত্রী বাঁধন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব ছিলেন। কথা বলেছিলেন জোরগলায়। এখনও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন তিনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে বাঁধন দাবি করেন, দুর্নীতির করালগ্রাস থেকে রেহাই পায়নি মুজিব সিনেমাও। তাই তিনি এ সিনেমার খরচের হিসাব দেখতে চান।
তিনি বলেন, ‘মুজিব নামে যে সিনেমাটি বানানো হয়েছে, আমি সেটার হিসাব চাই। দেখতে চাই, এত বাজেটের একটি সিনেমা কিভাবে এত খারাপভাবে বানানো যায়!’
বাঁধন আরও বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা বাজেট নিয়ে কী সিনেমাটা বানাল! সে টাকাগুলো কোথায় গেল, এই হিসাব আমি দেখতে চাই। আমার খুবই কষ্ট হয়েছে, দেশের টাকা দিয়ে বানানো, আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বানানো সিনেমা, যা ইচ্ছা তাই একটা বানিয়ে দেওয়া হলো!’
সিনেমাটির নির্বাহী প্রযোজক ও বিএফডিসির তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৭০ কোটি রুপির (বাংলাদেশি টাকায় ৮৩ কোটি টাকা) সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল।
মুজিব সিনেমার খরচ নিয়ে বাঁধন আরও বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা বাজেট নিয়ে কী যে একটি সিনেমা বানানো হয়েছে। সেই টাকাগুলো কোথায় গেল, এই হিসাব তো আমি দেখতে চাই। আমার খুবই কষ্ট হয়েছে, দেশের টাকা দিয়ে বানানো, আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বানানো সিনেমা, যা ইচ্ছা তাই একটা বানিয়ে দেয়া হয়েছে!’
সিনেমায় শেখ মুজিবুর রহমান চরিত্রে আরিফিন শুভ, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, শেখ হাসিনা চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া, আবদুল হামিদ খান ভাসানী চরিত্রে রাইসুল ইসলাম আসাদ, তাজউদ্দীন আহমদ চরিত্রে রিয়াজ এবং আইয়ুব খান চরিত্রে মিশা সওদাগর অভিনয় করেছেন।
২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাভেদকর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। আর সে চুক্তি অনুযায়ী, সিনেমাটির মোট বাজেটের ৬০ শতাংশ অর্থ দিয়েছে বাংলাদেশ। সে হিসাবে বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে বাংলাদেশের বিনিয়োগ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। অন্যদিকে বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ ভারতের বিনিয়োগ করার কথা; বাংলাদেশি টাকায় যা ৩৩ কোটির বেশি।