মোশাররফ করিমের সঙ্গে কীভাবে কাজের শুরু এবং তিনি তার মেধার পরিচয় দিয়েছেন সেটা জানিয়েছেন পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
ফেসবুকে এই নির্মাতা লেখেন, ‘‘মোশাররফ করিমের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ‘ক্যারাম’! ‘ক্যারাম’ কাজটা মূলত দুইটা জিনিসের অনুপ্রেরণায় বানানো। প্রথমটা হলো ছোটবেলায় ক্যারামে আমার নিদারুণ ব্যর্থতা। মাসুদ, বাবলু, এমনকি জাহাঙ্গীরের কাছেও হারতাম। কিন্তু পরাজয়টা কখনোই মানতাম না। দ্বিতীয় অনুপ্রেরণা হচ্ছে আমাদের শুটিং বাড়ির ক্যারাম টুর্নামেন্ট। আমি আর আমরা সব ভাই-ব্রাদার এক সাথে থাকতাম সেখানে- এটা সবাই জানেন। সেই আবাসিক ক্যাম্পে আমরা আবিষ্কার করি, কচি খন্দকার মোটামুটি আমার ছোটবেলার বুড়ো ভার্সন! তখন আমরা প্রতি খেলায় হারার পর কচিকে অত্যাচার করার নানা সৃজনশীল উপায় আবিষ্কার করি। এবং কচি ঘেপেঘুপে প্রায় প্রতিদিনই আমাদের ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়। আমি ঠিক করলাম এই সব নিয়েই ক্যারাম নামে একটা টেলিফিল্ম বানাবো। এবং কচি খন্দকারের প্রতি অত্যাচারের প্রতিদান হিসাবে তাকে স্ক্রিপ্ট রাইটার ক্রেডিট দিই। যদিও স্ক্রিপ্ট লেখা সেশনের সাথে তার আদতে কোনো সংস্পর্শ ছিল না!’
ফারুকী আরো লেখেন, ‘আমি স্ক্রিপ্ট লেখি সোফায় শুয়ে শুয়ে। লেখি না আসলে, দৃশ্য বলি! মাহমুদ আর সুজন সেটা কাগজে কপি করে। স্ক্রিপ্টের মাঝ পর্যায়ে মোশাররফ করিম আসেন আমাদের ক্যাম্পে। তাকে কাস্ট করার পর আমার উপর চাপ বেড়ে যায়। একজন সাংবাদিক ফোন করে বললেন, বস, আপনি শিওর উনি পারবেন? উনি কিন্তু প্রমিনেন্ট কেউ না। আমি বললাম, হি উইল বি প্রমিনেন্ট প্রিটি সুন! সেই সাংবাদিক আমার ফ্রেন্ডলিস্টেও আছেন!’
পরের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তিনি লেখেন, ‘তারপর শুটিংয়ে যাই কুমিল্লায়। প্রথম দিন উনি খুবই চাপে ছিলেন। আমি তখন কৌশলে কম চাপওয়ালা দৃশ্যগুলো করতে থাকি। আর উনাকে আমার সিস্টেমের মধ্যে ধীরে ধীরে ঢোকাতে থাকে। এটা একটা প্রক্রিয়া যেটা শুধু রিহার্সেল করে সম্ভব না। এটা হচ্ছে একটা হোলিস্টিক অ্যাপ্রোচ। যেখানে আমরা আলোচনা করি কবিতা নিয়ে, রাজনীতি নিয়ে, দেশ নিয়ে। এসব করতে করতে কখন যে আলগোছে আমরা একজন আরেকজনের মাথার ভেতরে ঢুকে বসে যাই! এই ঢোকাটা হয়ে গেলে, বাকীটা তো ইশারায় হয়ে যা। ’
সবশেষে তিনি লেখেন, ‘‘ক্যারাম’ আর ‘৪২০’র পর ওই সাংবাদিক ভাইটাই আমাকে এক অনুষ্ঠানে বলেন, না বস, মোশাররফ ইজ আ জিনিয়াস। আজকে সবাই জানে হি ইজ আ জিনিয়াস। দীর্ঘায়ু হন মোশাররফ ভাই। আর ভালো ভালো কাজ করেন। ইউ হ্যাভ আ লট টু অফার। ’