এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৯৪ হাজার ৫৮৩ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। আসনটিতে ১৫৮টি কেন্দ্র রয়েছে। মাহি ভোট পেয়েছেন মাত্র ৯ হাজার ৯ ভোট। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী পেয়েছেন ১ লাখ তিন হাজার ৫৯২ ভোট। নির্বাচনে হারের পর প্রথমবার ফেসবুক লাইভে এসে কথা বলেন মাহি।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে এই নায়িকা বলেন, ‘সবাই নিশ্চয়ই ভাবছেন আমার প্রচণ্ড মন খারাপ। হ্যাঁ, কিছুটা মন খারাপ তো হবেই। কারণ নির্বাচন একটা গেইম, সেই গেইমে আমি হেরে গেছি। মন খারাপ কিছুটা, কিন্তু ওই রকম লেভেলের না। কারণ প্রত্যেকটা সিচুয়েশনেই মাথায় রাখি যে, নেগেটিভ কিছু হতে পারে। তাই প্রত্যেকটা সিচুয়েশনের জন্যই আমি আসলে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম।’
এ সময় মাহি তার ইশতেহারে বলা কিছু উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্যোগ নিতে নতুন সংসদ সদস্যকে (এমপি) আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ইশতেহারে যেমনটা বলেছিলাম, নারীদের প্রত্যেকটা ঘর হবে কর্মসংস্থান, তরুণরা হবে উদ্যোক্তা। তো এই কাজটা আমি বড় পরিসরে কতটুকু করতে পারব জানি না! কারণ এই কর্মসংস্থানের বিষয়ে সরকারিভাবে যতটা উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব, তা ব্যক্তিগতভাবে আসলে একটু চ্যালেঞ্জিং। তারপরও ব্যক্তিগত উদ্যোগে যথেষ্ট করার চেষ্টা করব। এবং আমার ভীষণ ইচ্ছে ও প্রতিশ্রুতি ছিল—বরেন্দ্রভূমির রাস্তাঘাট নিয়ে। সারা বাংলাদেশে যেখানে রাস্তাঘাট এত উন্নত, সেখানে আমার তানোর-গোদাগাড়ীতে রাস্তাঘাটের যে বেহাল দশা, এখনও বৃষ্টি হলে হাঁটু কাদা হয়ে যায়। এখনও গরুর গাড়ি চলার মতো অবস্থা। তো এই রাস্তাঘাট ও বরেন্দ্রভূমির পানির যে সংকট, মোটর সমস্যা—যিনি নতুন এমপি হয়েছেন তাকে অনুরোধ করব এই বিষয়গুলোতে ফোকাস করতে।’
নির্বাচিত এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে মাহি বলেন, তিনি গত ১৫ বছরে যে উন্নয়নমূলক কাজ করেননি, এবার ৫ বছরে যেন এটা করেন। তার যে জনপ্রিয়তা একেবারে শূন্যের কোটায় চলে এসেছিল, সেটা তিনি যেন এই ৫ বছরে কাটিয়ে ওঠেন। তা না হলে আমি কিন্তু মাঠে আছি, আগামী নির্বাচনে আবারও দেখা হবে আপনার সাথে।’
এরপর প্রতিপক্ষকে সতর্ক করে মাহি বলেন, ‘প্রতিপক্ষকে বলছি, আগামী ৫ বছরে যে সমস্ত কর্মীরা আমার জন্য মাঠ পর্যায়ে উন্নয়নমূলক কাজ করবে, তাদের কোনো প্রকার ডিস্টার্ব যদি আপনারা করেন, মনে রাখবেন আপনাদের সঙ্গে অন্যান্য যে সমস্ত প্রার্থীরা টক্কর দেন, আমি কিন্তু তাদের মতো দুর্বল না। আমার কর্মীদের যদি অল্প অপমানও আপনারা করেন, সেটাও প্রতিহত করার জন্য সর্বোচ্চভাবে আমি নিজেই লড়ব। আমার জন্য যারা এই নির্বাচনে কাজ করেছে, তাদের জন্য দরকার হলে আমি নিজের জীবন দিয়ে দিতে পারি। তো তাদের প্রতি আপনারা সফট থাকবেন, বিশেষভাবে আমার কর্মীদের জন্য। আগামী ৫ বছরে আপনারা এমন এমন কাজ করবেন যেন মানুষের হৃদয়ে আপনাদের জায়গা হয়ে যায়। এটা যিনি নতুন এমপি হয়েছেন তার প্রতি আমার পরামর্শ।’