সুইডেনেই বেড়ে ওঠা তামান্না অনেকটা মা-বাবার অমতেই চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। অভিনয়ের জন্য চলে আসেন ঢাকায়। সেই থেকে তার পথ চলা শুরু। তারকাখ্যাতি পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি তার। দারুণভাবে আলো ছড়িয়েছিলেন ঢালিউডের এই চিত্রনায়িকা। কাজ করেছেন সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে। হুমায়ুন ফরিদীর সঙ্গেও একাধিক ছবিতে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন তামান্না।
আজকের সুপারস্টার শাকিব খান আর তামান্নার ক্যারিয়ার একই সময়ে শুরু। ক্যারিয়ারের শুরুতেই শহীদুল ইসলাম খোকনের ‘ভণ্ড’ ছবির মাধ্যমে তারকাখ্যাতি পান তামান্না। অন্যদিকে শাকিব হাঁটেন ধীর পায়ে।
এরপর অভিনয় করেছেন বাপ্পারাজ, রুবেল, রিয়াজ, শাকিল খান, মান্নার মতো জনপ্রিয় চিত্রনায়কদের সঙ্গে।
আজকের শাকিবের সাফল্য নিয়ে তামান্না বলেন, ‘শাকিবের স্ট্রাগল আমি নিজে চোখে দেখেছি। কারণ একসাথেই আমাদের শুরুটা হয়েছিল। ওর মেধা, পরিশ্রম আর লেগে থাকার কারণেই আজকের এই শীর্ষ আসন সে অর্জন করেছে।’
তামান্নার ক্যারিয়ারে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়ায় যেন সম্পর্ক। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েই নানান দ্বিধায় ভুগতে থাকেন। তামান্না বলেন, ‘এটাকে আমি প্রেম বলবো না। আমি বলতে চাই, ওটা আমার একটা ভুল ছিল। একজন ভুল মানুষকে জীবনে বেছে নিয়েছিলাম। তা নিয়ে আমার ভীষণ আক্ষেপও হয়।’
আজ দুই সন্তানকে বড় করেছেন। পাশাপাশি মাঝে কয়েকবছর একা থাকার পর একজন গুজরাটি মুসলিমকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। থাকছেন সুইডেনেই। এখন নতুনভাবে আবারও নিজেকে চলচ্চিত্র বা অভিনয়ে ব্যস্ত রাখতে চান। তামান্নার কথায়, ‘যদি কোনো অতিথি চরিত্রের কাজও হয়—সেটি করতে চাই। জীবনের অনেকগুলো বিকেলই তো পার হয়ে গেলো। এখন এই ম্যাচিউরড সময়ে ভালো কিছু কাজ করে যেতে চাই।’
এদেশের অন্যতম সুপারস্টার নির্মাতা শহীদুল ইসলাম খোকনের ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু। নির্মাতা খোকন প্রসঙ্গে তামান্না বলেন, ‘খোকন ভাই প্রসঙ্গে যাই বলি, কম বলা হয়ে যাবে। শুধু এটুকু বলতে চাই তিনি ছিলেন একজন আন্তর্জাতিক মানের নির্মাতা। খোকন ভাই বাংলাদেশে না জন্মে ইউরোপ আমেরিকায় জন্মালে তার ঘরে আজ অস্কার থাকতো।’
হুমায়ুন ফরিদীকে নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তামান্না বলেন, ‘ফরিদী ভাই প্রথম আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলে বলেছিলেন, ‘তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো। এদিকে তোমার ছবি তো সুপারহিট হয়ে গেছে। এরপর খোকন ভাই বললেন একটা বোরকা পরে ঘর থেকে বের হতে। একসাথে সিনেমা হলে আমি গেলাম। কিন্তু দর্শকেরা আমার চোখ দেখেই চিনে ফেলল। এরপর তো হুলস্থুল কাণ্ড। পরে পুলিশী প্রহরায় আমাকে উদ্ধার করা হয়। সেই এক্সপিরিয়েন্স জীবনেও ভুলবো না।’
দীর্ঘদিন নিজের এক অশান্তির সংসার বয়ে বেড়িয়েছেন তামান্না। তাই তার মতে, একজন শিল্পীর জীবন ধ্বংস করে দেবার জন্য বাজে পার্টনারই যথেষ্ট। তাই লাইফ পার্টনার বেছে নেবার সময় খুব হিসেব করেই নেওয়া উচিত।’
তামান্না এখন সুইডেনেই থাকেন। তবে ভালো কাজের অফার পেলেই ছুটে চলে আসবেন ঢাকায়। লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন শোনার জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষায় রয়েছেন তিনি।