সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন সংগীতশিল্পী, নির্মাতা ও সঞ্চালক হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
গায়কের সহকারী সবুজ মৃত্যুর খবরটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
২০১১ সালে লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে জুয়েলের। একসময় এই মরণব্যাধি সংক্রমিত হয় তাঁর ফুসফুস ও হাড়েও। তখন থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬। তিনি স্ত্রী সংগীতা আহমেদ, একমাত্র কন্যাসন্তান আজমুনা হাসান ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
জুয়েলের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদী। ১৯৮৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন জুয়েল। এসেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-কেন্দ্রিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন। তখনই বিভিন্ন মিডিয়ার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ঘটতে শুরু করে।
ছোটবেলায় মা-বাবার অনুপ্রেরণাতেই গানের জগতে পা রাখেন জুয়েল। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রতিবেশী একজনের কাছে গান শিখেছিলেন, আর মঞ্চে প্রথম গান করেছিলেন তখন তিনি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়েন। অন্যদিকে, চাচা কিংবদন্তি সুরকার আলতাফ মাহমুদ ছিলেন জুয়েলের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
গায়কের প্রথম একক অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। এরপর একে একে আরও দশটি একক অ্যালবাম প্রকাশিত হয় তাঁর। এ ছাড়া সত্তরের বেশি মিক্সড অ্যালবামে গান করেছেন জুয়েল। পারফর্ম করেছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন কনসার্টে।
তাঁর প্রকাশিত অ্যালবামগুলো হলো—‘এক বিকেলে (১৯৯৪)’, ‘আমার আছে অন্ধকার’ (১৯৯৫), ‘একটা মানুষ’ (১৯৯৬), ‘দেখা হবে না’ (১৯৯৭), ‘বেশি কিছু নয়’ (১৯৯৮), ‘বেদনা শুধুই বেদনা’ (১৯৯৯), ‘ফিরতি পথে’ (২০০৩), ‘দরজা খোলা বাড়ি’ (২০০৯) ও ‘এমন কেন হলো’ (২০১৭)। এ ছাড়া একটি করে গান নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে আরও দুটি অ্যালবাম ‘তাতে কি বা আসে যায়’ (২০১৬) ও ‘এই সবুজের ধানক্ষেত’ (২০১৬)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘এক বিকেলে’ অ্যালবামটি।