রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে মঞ্চ মাতালেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের সাহায্যার্থে আয়োজিত এ কনসার্টে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে মঞ্চে ওঠেন তিনি।
বিকেল চারটার দিকে ব্যান্ড সিলসিলার কাওয়ালি গানের মাধ্যমে কনসার্টটি শুরু হয়।
‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টটি যৌথভাবে আয়োজন করেছিল স্পিরিটস অব জুলাই প্ল্যাটফর্ম ও স্কাইট্র্যাকার লিমিটেড। আগেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এই কনসার্ট থেকে সংগৃহীত অর্থ শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার নিয়ে কাজ করা কল্যাণমূলক সংস্থা ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এ দেওয়া হবে।
রাহাত ফতেহ আলী খান ও তাঁর দল গান পরিবেশনার জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেয়নি। কনসার্টের টিকিট বিক্রি থেকে আয়োজক সংস্থা কোনো অর্থ নেবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে।
ঢাকায় গাইতে আসছেন রাহাত ফতেহ আলী খান—এমন ঘোষণার পর থেকেই সংগীতপ্রেমীদের মনে অন্য রকম উন্মাদনা কাজ করছিল। অবশেষে এল সেই প্রতীক্ষিত সন্ধ্যা।
দর্শকেরা করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। মঞ্চে উঠেই পরিষ্কার বাংলায় রাহাত ফতেহ আলী খান বলে ওঠেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। বাংলাদেশ, আমি তোমাকে ভালোবাসি।’
আর্মি স্টেডিয়ামের অগণিত দর্শকের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে গান ধরলেন, ‘তু না জানে আস পাস হ্যায় খুদা’। এরপর একে একে গেয়ে শোনান ‘সাজনা তেরা বিনা’, ‘ওরে পিয়া’, ‘জরুরি থা’, ‘মেরে রাশকে কামার’, ‘আফরিন আফরিন’সহ তাঁর জনপ্রিয় গানগুলো।
মাঝে ছেলে শাহজামান ফতেহ আলী খানকে মঞ্চে আহ্বান করেন রাহাত। বাবার সঙ্গে তিনিও গানে অংশ নেন। ‘দমা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে রাত সাড়ে ১১টায় পরিবেশনা শেষ করেন রাহাত ফতেহ আলী। আয়োজনটি উপস্থাপনা করেন জুলহাজ জুবায়ের ও দীপ্তি চৌধুরী।
কনসার্টের প্রথম দিকে মঞ্চে আসেন ‘আওয়াজ উডা’ গানের জন্য পরিচিত র্যাপার হান্নান। শুরুতে র্যাপ গানটি পরিবেশন করেন তিনি, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গানটি গাওয়ার জন্য জেল খেটেছেন হান্নান। হান্নানের পরিবেশনার পর মঞ্চে আসেন আরেক আলোচিত র্যাপার সেজান। ‘কথা ক’ গান দিয়ে সাধারণ শ্রোতাদের মাঝে পরিচিতি পেয়েছেন সেজান। মঞ্চে গানটি ধরলে শ্রোতাদের মধ্যে সাড়া ফেলে।
বিরতির পর সাড়ে পাঁচটার দিকে মঞ্চে আসে রক ব্যান্ড ‘আফটারম্যাথ’। মাইক্রোফোন হাতে ব্যান্ডের ভোকালিস্ট নাভিদ ইফতেখার চৌধুরী শ্রোতাদের বললেন, ‘এর আগে কখনোই আর্মি স্টেডিয়ামে আফটারম্যাথ কনসার্ট করেনি। প্রথমবারের মতো আর্মি স্টেডিয়ামে গাইছি। এবার স্বপ্ন পূরণ হলো।’
কনসার্টে শুরুতেই ব্যান্ডটি গেয়েছে তরুণদের মধ্যে আলোচিত গান ‘অধিকার’। এরপর ‘উৎসর্গ’, ‘মাটির রোদ’সহ আরও কয়েকটি গান পরিবেশন করেছে আফটারম্যাথ।
সন্ধ্যায় মঞ্চে আসে ব্যান্ডদল চিরকুট। শুরুতে বাদ্যযন্ত্রীরা জাতীয় সংগীতের সুর তোলেন। স্টেডিয়ামে দর্শকের আসনে বসে থাকা শ্রোতারা জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। এরপর দেশাত্মবোধক গান ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’ দিয়ে পরিবেশনা শুরু করে ব্যান্ডের ভোকালিস্ট সুমি।
এরপর ‘মরে যাব’, ‘জাদুর শহর’, ‘আহারে জীবন’-এর মতো গান দিয়ে ঘোরলাগা ছড়িয়ে দেয় ব্যান্ডটি। মোলায়েম সুরের এসব গানে যাতনা খুঁজে খুঁজে ফিরেছেন শ্রোতারা।