স্ক্রিনশট ফাঁসের হুমকি চুমকির, মুনিরা বললেন বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই

সম্প্রতি শিল্পীদের গোপন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই চলছে তুমুল সমালোচনা। আওয়ামী লীগ সমর্থিত শোবিজের একঝাঁক তারকা যুক্ত ছিলেন ‘আলো আসবেই’ নামের এই গ্রুপে।

যেই গ্রুপে গ্রুপে নজর রাখা হতো ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ওপর। শুধু তাই নয়, সেখানে তারা আলোচনা করত কোথায়, কী করবে। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে খোলা এই গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সংসদ সদস্য ও অভিনেতা ফেরদৌস, নায়ক রিয়াজ, অভিনেতা সাজু খাদেম ও অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি।

গ্রুপে ছিলেন- সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, রিয়াজ আহমেদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, জামশেদ শামীম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, আহসানুল হক মিনু, গুলজার, এস এ হক অলীকসহ অনেকে।

সেখানে দেখা যায়, আওয়ামীপন্থি তারকারা ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে গোপনে ছক কষছিল। তার অংশ হিসেবে ছাত্রদের ওপর ভয়ংকর সব পরিকল্পনার কথা উঠে আসে। এরই মধ্যে অভিনেত্রী মনিরা মিঠু দাবি করেন, আলো আসবেই গ্রুপের মত আরও একটি গ্রুপ রয়েছে।

৪ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন মনিরা। সেখানে তিনি অভিযুক্ত করেন অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকিকে। সে অংশে মনিরা উল্লেখ করেন, ‘শিল্পী সংঘের সেক্রেটারি নাজনীন হাসান চুমকির নাকি সারারাত ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল যে, কীভাবে আমি এই অশ্লীল ভিডিও আপলোড দিলাম। কারণ ভিডিওর এক জায়গায় ড. এজাজ ভাই কমলা খাচ্ছিলেন আর ‘বিচি’ শব্দটা উচ্চারণ করেছিলেন।’

মনিরা লেখেন, ‘অ্যাক্টর ইকুইটির সেই গোপন গ্রুপের একজন সদস্য আমাকে কিছু স্ক্রিন শট পাঠান আমি যেন দ্রুত ভিডিওটি ডিলিট করি। স্ক্রিনশটে দেখি সুজাত শিমুল আমাকে তুমুল গালাগাল করছেন। আমি অবাক হয়ে দেখলাম যে, শিল্পী সংঘের কোনো সিনিয়র সদস্য সুজাত শিমুলকে বলেন নাই যে, একটি ভিডিওর জন্য মিঠু আপাকে এইভাবে গালাগাল করছো কেন? নাজনীন হাসান চুমকি তো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারতেন যে, মিঠু আপা ভিডিওটি শ্রুতিমধুর না, মুছে ফেলেন। কারণ তার সাথে আমার কোনো ধরনের বিবাদ ছিল না।’

মিঠুর এমন অভিযোগের পর মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকি। সঙ্গে মনিরা মিঠুকে পালটা হুমকিও দেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘থিয়েটার, ধারাবাহিক নাটক, ক্লাব ৯২-৯৪, পাঠচক্র, অফিস, বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদির ন্যায় অভিনয়শিল্পী সংঘ বাংলাদেশের কমিটির সদস্যদের নিয়ে মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল এবং আছে। খুব স্বাভাবিক, থাকে এবং থাকবেই। সেটাকে কিনা ‘আলো আসবেই’ এর তুলনা করলেন স্বনামধন্য ও শ্রদ্ধেয় মুনিরা মিঠু আপা!’

নাজনীন লেখেন, ‘সেখানকার কথোপকথন এই কমিটির একজন সদস্য তাকে স্ক্রিনশট পাঠাল (শুধু আমার এবং সুজাত শিমুল ভাইয়ের) সেটার ভিত্তিতে তিনি আজ যে বিশাল স্ট্যাটাস দিলেন। সেই স্ট্যাটাসকে আবার নিউজ করল কিছু নিউজপেপার। উক্ত নিউজপেপারগুলো একবারও আমার বা সুজাত শিমুলের সাথে কথা বলারও প্রয়োজন মনে করল না! এটা খুবই দুঃখজনক।’

অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘যাইহোক, ১০ মে ২০২৪, বেলা ১০ টা ২৫ মিনিটে অর্থাৎ ৪ মাস পূর্বে মিঠু আপা বারবার আমাকে নক করে এই একই বিষয় নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা যাবৎ অনেক কথা বলেছিলেন, লিখেছিলেন এবং ভয়েস টেক্সটও পাঠিয়েছিলেন। দুজন সহকর্মীর ভুল বোঝাবুঝির অবসান ও সুসম্পর্ক পুনঃবহাল হয়েছিল।’

শেষে হুমকি দিয়ে অভিনেত্রী লেখেন, ‘কিন্তু আজ এই স্ট্যাটাস ও নিউজগুলো পড়ার পর সেইসব কথোপকথনের স্ক্রিনশট ও ভয়েস টেক্সট (আমার কাছে এখনও সযতনে আছে) প্রকাশ করে দিলে কার সম্মান বাড়বে সেটাই ভাবছি।’

এদিকে চুমকীর পোস্টের মন্তব্যের ঘরে মনিরা মিঠু উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্ক্রিনশট ও ভয়েস টেক্সট প্রকাশ করতে পারেন চুমকি। এতে তার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই।

মনিরার উত্তর, ‘চুমকি, হ্যাঁ, আমি তোমাকে ভয়েস দিয়েছিলাম, টেক্সট দিয়েছিলাম এবং ফোন করেছিলাম। কিন্তু তুমি বলেছিলে তোমার স্বামী বাসায় তাই ফোন ধরবে না। হ্যাঁ নিশ্চই, তুমি সেই টেক্সটগুলো ভয়েসগুলো প্রকাশ করতে পারো। আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। আর সেইখানে সুজাত শিমুলের গালি ছিল একদম কবিতার মতোই, তুমি আমাকে গালি দাওনাই, তোমার ভাষা খারাপ ছিল না কিন্তু আর কারোর গালি আমার চোখে পড়ে নাই সেইখানে আমি কেন মিথ্যা বলব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.