টাঙ্গাইল শহরের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে স্ত্রীকে সমাহিত করে ঢাকায় ফেরেন পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। জীবনসঙ্গী প্রিয়া রহমানের শোকে কাতর ছিলেন সোহান, শরীরটাও ভালো যাচ্ছিল না। সন্ধ্যায় উত্তরার বাসায় ঘুমের মধ্যে মারা যান ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার এই পরিচালক। ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় একই কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে পরিচালক সোহানকে। টাঙ্গাইল পুরাতন বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদে তার জানাজা নামাজ পড়ানো হয়।
এর আগে বুধবার রাত ১১টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর উত্তরার তার নিজ বাসার সামনে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সোহানের মৃত্যুর খবরে চিত্রনায়ক শাকিব খান, রিয়াজ, ফেরদৌস, নিপুণসহ ঢাকাই সিনেমার পরিচালক ও শিল্পীরা তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে যান। তবে সোহানের মরদেহ এফডিসিতে নেওয়া হয়নি। মৃত্যুকালে তিনি তিন মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁদের মধ্যে দুই মেয়ে দেশেই থাকেন। একজন মালয়েশিয়ায় পড়াশোনা করেন।
উল্লেখ্য, সোহানুর রহমানের স্ত্রী মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে ১২ সেপ্টেম্বর মারা যান।
১৯৭৭ সালে সোহানুর রহমান সোহান তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন আরেক বিখ্যাত পরিচালক শিবলী সাদিকের সহকারী হিসেবে। ১৯৮৮ সালে ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’ দিয়ে নির্মাতা হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এছাড়া এজে মিন্টু, শহীদুল হক খানেরও সহকারী ছিলেন। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ তাকে পরিচালক হিসেবে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। এ ছবিতে অভিষেক হয় সুপারস্টার সালমান শাহ ও মৌসুমীর। তার হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়েছে হালের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান, ডন, শাকিল খানসহ অনেক অভিনেতা ও কলাকুশলীর।
দুডজনেরও বেশি ছবি পরিচালনা করেছিলেন সোহান। এগুলো হচ্ছে─ বিশ্বাস অবিশ্বাস, বেনাম বাদশা, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, আখেরি রাস্তা, বিদ্রোহী কন্যা, স্বজন, আমার ঘর আমার বেহেশত, আমার দেশ আমার প্রেম, মা যখন বিচারক, অনন্ত ভালবাসা, কিলার, সত্যের বিজয়, স্বামী ছিনতাই, বলো না ভালোবাসি, বৃষ্টি ভেজা আকাশ, কথা দাও সাথী হবে, আমার জান আমার প্রাণ, পরাণ যায় জ্বলিয়া রে, কোটি টাকার প্রেম, দ্যা স্পিড, সে আমার মন কেড়েছে, এক মন এক প্রাণ, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু।
সোহানু রহমান সোহান বেশ কয়েকবার চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে কাফন কাপড় পরে হিন্দি ছবি আমদানির বিরুদ্ধে হওয়া আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সবশেষ ২০২১-২৩ মেয়াদে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি। বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন।