২০০৭ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত নাটক ছিল ‘৪২০’। তৎকালীন দর্শকের মধ্যে এটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। এবার এলো ‘৪২০’-এর ডাবলআপ ‘৮৪০’ সিনেমা; যা শুক্রবার দেশের মান সম্মত ১৫টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েছে।
সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ও ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। মুক্তির প্রথম দিনেই দর্শকদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে এই চলচ্চিত্র। হলগুলো দর্শকে পরিপূর্ণ।
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্র মেয়র ডাবলু হয়ে পর্দায় এসেছেন নাসির উদ্দিন খান। এ চরিত্রে তার অভিনয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
‘৮৪০’-সহ নানা প্রসঙ্গে দেশের শীর্ষ স্থানীয় একটি জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
প্রশ্ন: বলা হচ্ছে, ‘৮৪০’ হচ্ছে ১৭ বছর আগের ‘৪২০’ ধারাবাহিকের ডাবলআপ। ‘৪২০’–এ কেন্দ্রীয় দুটি চরিত্রে মোশাররফ করিম ও লুৎফর রহমান জর্জ অভিনয় করেছেন। ‘৮৪০’-এর ট্রেলার প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই দুই অভিনয়শিল্পীকে খুঁজেছেন অনেকে…
নাসির উদ্দিন খান : এটা আমার নজরেও এসেছে। বিষয়টি আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। এ থেকে আমি বুঝতে পারলাম, ‘৪২০’-এর সঙ্গে দর্শকদের কী পরিমাণ আবেগ জড়িত, ধারাবাহিকটি কী পরিমাণ পছন্দ করেছেন তারা। তবে বিষয়টা মোটেও এমন নয় যে দর্শক আমাকে ঘৃণা করেন বা অপছন্দ করেন। এতে বরং ‘৪২০’ ও এর কলাকুশলীদের প্রতি তাদের ভালোবাসাই প্রকাশ পেয়েছে। আশা করি, ‘৮৪০’-ও তাদের ভালো লাগবে।
প্রশ্ন: ‘৮৪০’–এ আপনি ছাড়া আর যাঁর অভিনয় ভালো লেগেছে, কেন লেগেছে?
নাসির উদ্দিন খান : শাহরিয়ার নাজিম জয় ও জায়েদ খান। জানি, অনেকেই মুখ টিপে হাসছেন। বিশ্বাস না হলে ‘৮৪০’ দেখে আসুন।
প্রশ্ন : পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার কথায় বলেছেন, ‘৮৪০’ হচ্ছে আওয়ামী দুঃশাসনের এক্স–রে রিপোর্ট। প্রধান অভিনয়শিল্পী হিসেবে এটা কি আপনি জানতেন?
নাসির উদ্দিন খান : যতটুকু সিনেমায় দেখেছি, ততটুকু জানতাম না। তবে মেয়র ডাবলুর চরিত্র আমি সব দলের লোকদের মধ্যেই দেখেছি। এই চরিত্রের লোকেরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে যা হয়, তা-ই আমরা ‘৮৪০’-এ দেখতে পেয়েছি।
প্রশ্ন: মেয়র ডাবলু হয়ে উঠতে কী কী প্রস্তুতি ছিল আপনার?
নাসির উদ্দিন খান : আমি রাজনৈতিক চরিত্রে অভিনয় করেছি, তবে এতটা বৃহৎ আকারে করিনি। আমি এখানে একজন মেয়রের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার সামনে চরিত্রটি হয়ে উঠতে কোনো রেফারেন্স ছিল না। কাজটি করতে গিয়ে আমার ভাবনাচিন্তা পরিচালকই জুগিয়ে দিয়েছেন।
আমি গত বছরের মে মাসে যুক্ত হই। এরপর নভেম্বরে শুটিং শুরু করি। তার আগের ছয় মাস ফারুকী ভাইয়ের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছি। চরিত্রের মনস্তত্ত্ব, দর্শন নিজের মধ্যে ধারণ করতে এসব আড্ডা দারুণ কাজে দিয়েছে। আমরা শুটিংয়ে নভেম্বরে গেলেও কস্টিউমসহ মহড়া করেছি এক মাস আগে থেকে।
আমার মনে হয়েছে, পরিচালকের প্রতি যত বেশি শিল্পীকে সঁপে দেওয়া যায়, অভিনয়শিল্পীর তত বেশি লাভ। পরিচালকই তখন তাঁর মতো করেই অভিনয়শিল্পীকে গড়ে তুলবেন। তা ছাড়া ইম্প্রোভাইজেশনের মাধ্যমে অভিনয়শিল্পীরা তো তাৎক্ষণিকভাবে কিছু অলংকার যুক্ত করেনই।
প্রশ্ন:বিভিন্ন সময়ে নানান সরকারের আমলে সেই সরকারের ন্যারেটিভ অনুযায়ী করা চিত্রনাট্যে কাজ করে থাকেন অনেক শিল্পী। একটা সময় সরকার পাল্টে গেলে শিল্পীদের হেনস্তা, ভাবমূর্তির সংকট, গ্রহণযোগ্যতার সমস্যায় পড়ার কথা শোনা যায়। এতে দায়টা আসলে কার বলে মনে করেন?
নাসির উদ্দিন খান : যদি অরুচিকর, আপত্তিকর, অসত্য বিষয়বস্তু শিল্পী উপস্থাপন করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই শিল্পী দায়ী।
দেশের সবচেয়ে আধুনিক মাল্টিপ্লেক্স চেইন স্টার সিনেপ্লেক্সের ঢাকা ও চট্টগ্রামের ছয়টি শাখায় দেখা যাচ্ছে সিনেমাটি। এছাড়াও ঢাকার ব্লক বাস্টার সিনেমাস ও শ্যামলী সিনেমা, সিলেটের গ্র্যান্ড মুভি থিয়েটার, নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ, চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন ও সুগন্ধা সিনেমা, রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভারভিউ, বগুড়ার মম ইন এবং পাবনার রূপকথায় সিনেমাটি দেখা যাচ্ছে প্রথম সপ্তাহে।
এতে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান, মারজুক রাসেল, ফজলুর রহমান বাবু, জাকিয়া বারী মম, শাহরিয়ার নাজিম জয়, জায়েদ খান, রাজশাহী ও নওগাঁর বেশ কিছু স্থানীয় অভিনয়শিল্পী।