দেশের কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে জোহরের নামাজের তার জানাজার নামাজ অনু্ষ্ঠিত হয়।
এর আগে সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে গায়ককে বহন করা উড়োজাহাজ ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এরপর সেখান থেকে একটি হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয় তার মরদেহ।
শাফিনের বড় ভাই হামিন আহমেদে জানান, বনানী কবরস্থানে শাফিনকে দাফন করা হবে। যেখানে গায়কের বাবা সংগীতগুরু কমল দাশগুপ্ত ও মা কিংবদন্তি নজরুলশিল্পী ফিরোজা বেগম শায়িত আছেন।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় দার আল নুর ইসলামিক কমিউনিটি মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছিল।
প্রবাসীদের গান শোনোনোর জন্য গত ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদ। ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় একটি কনসার্ট ছিল তার। কিন্তু এর আগেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এই গায়ক। দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা নেয়ার পর গত ২৫ জুলাই সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
শাফিন আহমেদের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। মা কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ফিরোজা বেগম এবং বাবা সংগীতঙ্গ কমল দাশগুপ্ত। এই পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণে ছোটবেলা থেকেই শাফিন আহমেদ গানের ভেতরেই বড় হন। শৈশবে বাবার কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীত শিখেছেন আর মায়ের কাছে শিখেছেন নজরুল।
এরপর বড়ভাই হামিন আহমেদসহ যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুবাদে পাশ্চাত্য সংগীতের সংস্পর্শে এসে ব্যান্ডসংগীত শুরু করেন। দেশে ফিরে গড়ে তোলেন মাইলস। যা দেশের শীর্ষ ব্যান্ডের একটি এখনও। এই ব্যান্ডের ৯০ ভাগ গান শাফিন আহমেদের কণ্ঠে সৃষ্টি হয়েছে। পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। তিনি কণ্ঠের পাশাপাশি ব্যান্ডটির বেজ গিটারও বাজাতেন।
সংগীতের পাশাপাশি শেষ দিকে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন এ গায়ক। ২০১৭ সালে তিনি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে (এনডিএম) যোগ দেন। এরপর ২০১৮ সালে জাতীয় পার্টিতে যুক্ত হন। দুই দলেই গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন শাফিন।
শাফিন আহমেদের কণ্ঠে তুমুল জনপ্রিয় কিছু গানের মধ্যে রয়েছে চাঁদ তারা সূর্য, জ্বালা জ্বালা, ফিরিয়ে দাও, ফিরে এলে না, আজ জন্মদিন তোমার প্রভৃতি।