আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদকে হারানোর দিন আজ। ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। তার পুরো নাম আবু তারেক মাসুদ। তবে তিনি সবার কাছে তারেক মাসুদ নামেই বেশি পরিচিত।
মৃত্যুদিনে তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ। আগামী দিনের তরুণ নির্মাতাদের কাছে তারেক মাসুদ ছিলেন এক স্বপ্নের নাম। জীবনের সকল ধরনের স্বার্থপরতা ত্যাগ করে সিনেমা নির্মাণে ব্রত হয়েছিলেন কিংবদন্তী নির্মাতা তারেক মাসুদ। বলতে চেয়েছিলেন নিজের মাটি ও মানুষের গল্প।
১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার মায়ের নাম নুরুন নাহার মাসুদ ও বাবার নাম মশিউর রহমান মাসুদ।
শিক্ষাজীবন শেষ করে ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ থেকে ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স শেষ করেন তিনি। এরপরই শুরু করেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের কাজ। আর সেখান থেকেই সিনেমা তৈরির ইচ্ছা কাজ করতে শুরু করে তার।
২০০২ সালে নির্মিত প্রথম ছবি মাটির ময়না দিয়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে পরিচিতি পান তারেক মাসুদ। এরপর একে একে দর্শককে উপহার দেন আদম সুরত, মুক্তির গান, অন্তর্যাত্রা, রানওয়েসহ বেশ কয়েকটি ভিন্ন ধারার ছবি, যা শুধু নিজ দেশেই নয়, প্রশংসা কুড়িয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার ও চ্যানেল আই চলচ্চিত্র পুরস্কার ইত্যাদি।
এছাড়াও তিনি চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত হন ফিল্ম সাউথ এশিয়া, কান চলচ্চিত্র উৎসব, মারাকেচ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, থ্রি কন্টিনেন্ট উৎসব, ভারতীয় আন্তর্জাতিক ভিডিও উৎসব, কারা চলচ্চিত্র উৎসব, ডিরেক্টরস গিল্ড অব গ্রেট ব্রিটেন, ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব বাংলাদেশ অনুষ্ঠানগুলোতে।
তবে হঠাৎই যেন এই নক্ষত্রের পতন ঘটে ২০১১ সালে। ১৩ আগস্ট আজকের এই দিনে মানিকগঞ্জে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। ‘কাগজের ফুল’ নামে একটি ছবির শুটিংয়ের লোকেশন নির্বাচন করে ফেরার পথে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
সেই গন্তব্যের সঙ্গী আরও ছিলেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিক ও বিশিষ্ট চিত্রগ্রাহক মিশুক মুনীরসহ নয়জন। ওই সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। আহত হন তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদসহ চারজন।