১১ বছর পর সেন্সরে যাচ্ছে নিষিদ্ধ ‘রানা প্লাজা’

প্রায় এগারো বছর আগে অর্থাৎ ২০১৩ সালে সাভারের রানা প্লাজা ধসে অনেক গার্মেন্টস কর্মীর মৃত্যু হয়। ভবন ধসের ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে রেশমা নামের এক মেয়েকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। সেই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে তখন পরিচালক নজরুল ইসলাম খান নির্মাণ করেন ‘রানা প্লাজা’ নামের একটি সিনেমা।

আলোচিত সিনেমাটি সেন্সর সনদ না পাওয়ায় দশ বছরেও মুক্তি পায়নি। সিনেমাটির নির্মাতা নজরুল ইসলাম খান আদালতে গিয়েও সিনেমাটি মুক্তি দিতে পারেননি। ২০১৪ সালে প্রথমবার সেন্সর ছাড়পত্রে নিষেধাজ্ঞা এলে নির্মাতা রিট করেন হাইকোর্টে। এরপর ২০১৫ সালের ১১ জুলাই ছাড়পত্র পেলেও ২৪ আগস্ট মুক্তির ঠিক আগের দিন আবার প্রদর্শনীতে নিষেধাজ্ঞা আসে।

সেন্সরবোর্ডের এমন নাটকীয়তায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন নির্মাতা নজরুল ইসলাম খান। জানা যায় এরপর স্ট্রোকও করেন তিনি। সিনেমাটি নিয়ে আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। দেশে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর আবার আশায় বুক বেঁধেছেন নির্মাতা নজরুল।

আগামী সপ্তাহে সব কাগজপত্র ঠিক করে ফের সেন্সরে জমা দেবেন সিনেমাটি। নজরুল ইসলাম খান বলেন, সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা আমার সঙ্গে বসে ছবিটি দেখেছেন, চোখের পানি ফেলেছেন, বুকে জড়িয়ে ধরে বলেছেন, ‘দারুণ ছবি’। অথচ পরের দিন জানলাম, ছাড়পত্র দিতে ওপর থেকে নিষেধ করা হয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও গত ১০ বছর আমার ছবিটি সেন্সর ছাড়পত্র পায়নি।

এরপর উচ্চ আদালতে গেলেও লাভ হয়নি বলে জানালেন নির্মাতা। বললেন, কে ছিল এর বিরুদ্ধে সেটাও বলা হয়নি আমাকে। দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি ছবিটি মুক্তি দেওয়ার জন্য। মন্ত্রীদের কাছেও গিয়েছিলাম। কেউ আমার পাশে দাঁড়াননি। এখন সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ কথা বলতে পারছে, নিজের মত প্রকাশ করতে পারছে। আশা করছি, আমিও ছবিটি মুক্তি দেওয়ার স্বাধীনতা পাব।

পরীমণি বলেন, এই সিনেমায় ঝুঁকিপূর্ণ এমন অনেক দৃশ্য ছিল, যে সব দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে আমার দেহ থেকে রক্ত ঝরেছে। অনেক কষ্ট করে সিনেমাটিন শুটিং করেছি। এত কষ্ট করে আর পরিশ্রম এখন অবধি কোনো সিনেমায় করিনি। এখানে আমার চোখের পানি, শরীরের রক্ত সবই ছিল অকৃত্রিম।

সিনেমাটিতে সেই রেশমার চরিত্রে অভিনয় করেন পরীমণি। এই ছবিতে নাম লিখিয়েই প্রথম আলোচনায় আসেন এই নায়িকা। ছবিতে তার বিপরীতে রয়েছেন চিত্রনায়ক সাইমন।আরও অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, প্রয়াত অভিনেতা সাদেক বাচ্চু, কাবিলা, রেহানা জলি, শিরিন আলম, হাবিব খান প্রমুখ। পরিচালক নজরুল ইসলাম খানের কাহিনি ও চিত্রনাট্যে নির্মিত এ সিনেমার সংলাপ লিখেছেন মুজতবা সউদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.