অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফের দখলদার ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে ফিলিস্তিন। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ করে আবারও গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
ওইদিন থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০০ শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে—এমন তথ্য উঠে এসেছে মানবাধিকার সংগঠন ও স্থানীয় সূত্রগুলোতে।
গাজায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহত মানুষের সংখ্যা এতই বেশি যে, হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই নেই। সীমাহীন সংকটে রয়েছে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী। ফলে চিকিৎসা না পেয়ে বহু মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন।
আলজাজিরার তথ্যমতে, গত ১২ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী সবচেয়ে বেশি হামলা চালিয়েছে গাজার খান ইউনিস এলাকায়। সেখানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন। আবাসিক ভবন ও অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে চালানো এসব হামলায় বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন—বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন কেউ কেউ।
ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধারের কাজও ব্যাহত হচ্ছে টানা হামলা ও সীমিত সরঞ্জামের কারণে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই হৃদয়বিদারক পরিস্থিতিতে গাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের সচেতন মানুষ। ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদও ফিলিস্তিনের প্রতি নিজের গভীর মর্মবেদনা প্রকাশ করেছেন। রোববার বিকেলে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা একটি বিশেষ স্যুট পরিহিত ছবি শেয়ার করে সিয়াম লেখেন, “আমি যখন এই পোস্ট লিখছি, ততক্ষণে গাজার অস্তিত্ব কি মুছে গেছে? আমরা কি পারলাম না এই শহরটাকে, এই দেশটাকে বাঁচাতে?”
তিনি আরও লেখেন, “ফিলিস্তিনের জন্য আমার মনের কান্না কখনো থামাতে পারিনি। ‘জংলি’ ছবির গল্প যখন লেখা হচ্ছিল, তখন বারবার ফিলিস্তিনি শিশুদের কথাই মনে পড়ত। আমরা কি এই শিশুদের জন্য একটি সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে পারবো না?”
সিয়াম তাঁর পোস্টে বিশ্ব নেতৃত্ব, ইসলামি চিন্তাবিদ, নোবেলজয়ীসহ সাধারণ মানুষদের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, “আমরা কেউ কি এই দায় এড়াতে পারবো? আল্লাহ, তুমি জান্নাতের দরজা খুলে দাও। এই পৃথিবী গাজাবাসীর জন্য নয়। আমরা পারিনি, আমরা পারলাম না।”
মানবিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা গাজার জন্য এখন সারা দুনিয়ারই প্রয়োজন আরও বেশি সহানুভূতি, পদক্ষেপ ও জবাবদিহি।