প্রতিবাদের মুখে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসের অনুষ্ঠান স্থগিত, বিতর্কিত অতিথিদের ঘিরে সমালোচনার ঝড়

জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (এফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা তানি।

ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে অভিযুক্ত এবং আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিতর্কিত মাসুমা তানিকে নিয়ে আয়োজনটি ঘিরে শুরু থেকেই সমালোচনার ঝড় ওঠে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে।

এছাড়াও, অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে রাখা হয় ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে গিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া ও রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত সুজাতা আজিমকে, যিনি এর আগেও ফ্যাসিবাদী অবস্থানের জন্য সমালোচিত হয়েছেন।

বিষয়টি জানাজানি হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই প্রবল সমালোচনার মুখে শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করতে বাধ্য হয় শিল্পকলা একাডেমি।

একাডেমির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ওয়ারেছ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, “অনিবার্য কারণে আমরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। উপযুক্ত সময়ে পরবর্তীতে এটি আয়োজন করা হবে।”

তবে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, স্বৈরাচার আমলে ঘোষিত জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস কেন এখনো উদযাপন করা হচ্ছে? এ প্রসঙ্গে ওয়ারেছ হোসেন বলেন, “শিল্পকলা একাডেমির নীতিমালা অনুযায়ী সব জাতীয় দিবস উদযাপনের নির্দেশনা রয়েছে। যেহেতু সরকারিভাবে দিবসটি বাতিল করা হয়নি, তাই নিয়ম অনুসারে আমাদের পালন করতে হয়।”

অন্যদিকে, তথ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলচ্চিত্র খাতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই হস্তক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকে।

চলচ্চিত্র সাংবাদিক আহমেদ তেপান্তর বলেন, “চলচ্চিত্রের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়, আলাদা প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এমন বাড়াবাড়ি সত্যিই দুঃখজনক ও অযৌক্তিক।”

সামগ্রিকভাবে, এই আয়োজন ঘিরে বিতর্ক, প্রতিবাদ এবং পরবর্তী স্থগিতাদেশ এক নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আদৌ কতটা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published.