২৭ অক্টোবর ছিল মাহিয়া মাহির জন্মদিন। সে উপলক্ষ্যে তিনি তার ভক্তদের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন। আর এর মাধ্যমে তিনি দীর্ঘ এক যুগের অধিক পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালন করলেন। মূলত স্কুলের বান্ধবী রূপালীর মৃত্যু শোকে এতদিন জন্মদিন পালন করতেন না মাহি।
‘আমি তখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে পরি। আজ থেকে ১৪-১৫ আগের ঘটনা হবে। আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু রুপালী, যাকে আমি রুপা বলে ডাকতাম সে মারা যায় আমার জন্মদিনে। তার আমার সাথে কেক কাটার কথা ছিলো। তাই আমি আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালন করতাম না’— বলেন মাহি।
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময় আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিলো। আমি সবসময় ওর থেকে দেখে দেখে পরীক্ষা দিতাম। ব্যাপারটা এমন ছিলো ও না দেখালে আমি পরের ক্লাশে উঠবো না। যে কোনো কারণে হোক তার সাথে আমার ঝগড়া হয় জন্মদিনের আগের দিন। রাতে সে ফোনের পর দিচ্ছিলো— আমার নাম্বার, আম্মুর নাম্বারে। আমি ধরছিলাম না।’
মাহি এক নাগাড়ে বলে যান, ‘পরদিন সকালে পরীক্ষার হলে আমি আধ ঘণ্টা আগে যাই। তখন গিয়ে দেখি রুপা আসে নাই। সাধারণত সে আগে এসে আমার জন্য সিট রাখতো। আমি অপেক্ষা করছিলাম। পরীক্ষার এক ঘণ্টা পর খবর পেলাম ও নাকি মারা গেছে। পরীক্ষা রেখে ওর বাসায় ছুটে যাই আমি।’
‘আমি তখনও বিশ্বাস করি নাই ও মারা গেছে। যদি জানতাম সে আমার সাথে কেক কাটতে চেয়েছিলো। তাহলে আমি তার ফোন ধরতাম। সে নাকি বাবা-মা’র সাথে অন্য কারণে রাগ করে আত্মহত্যা করেছিলো। বিশ্বাস করেন এরপর থেকে যতবারই কেক কাটতে চেয়েছি আমার মনে হয়ে ও তো আমার জন্য কেক নিয়ে অপেক্ষা করছে’— অশ্রুসজল চোখে বলেন মাহি।
গতকাল সন্ধ্যায় উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে মাহির ভক্তরা তাকে প্রায় দেড় যুগ পর এ কষ্ট থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেছে। এ নিয়ে মাহি বলেন, ‘আমার ভক্ত না এরা, এরা আমার ছোট ছোট বাচ্চাকাচ্চা, যারা কিছুই না বুঝে আমার জন্য এমন আয়োজন করেছে। সত্যিই আমি অবাক হয়েছি। এই বাচ্চা-কাচ্চাগুলোই আমার অনুপ্রেরণা। এদের জন্য আরও নতুন নতুন কাজ করতে সাহস যোগাবে।’
জন্মদিনের এ বিশেষ আয়োজনটির দায়িত্বে ছিলেন আততীন, ওয়াসিম, উজ্জ্বল ও সূর্য। মাহি তাদের প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
২০১২ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়ার হাত ধরে মাহিয়া মাহির চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে। তার হাতে বর্তমানে রয়েছে ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘স্বপ্নবাজি’ সিনেমা দুটি।