একটা সময় চিত্রনায়ক মান্নার সিনেমা মানেই ছিল দর্শকদের কাছে বাড়তি উন্মাদনা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দেওয়ার পাশাপাশি দাপিয়ে বেরিয়েছেন চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু দেড় দশক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না অকালেই ফেরার দেশে পাড়ি জমান জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক।
তবে মৃত্যুর আগে অভিনয় করেছিলেন ‘জীবন যন্ত্রণা’ শিরোনামের একটি সিনেমায়। তখন অবশ্য সিনেমাটির নাম ছিল ‘লীলামন্থন’। পরে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে নাম পাল্টে ফেলা হয় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমাটির।
মান্নার মৃত্যুর পর বেশ কয়েকবার মুক্তি পরিকল্পনা করা হলেও নানা জটিলতায় আলোর মুখ দেখেনি মান্না অভিনীত শেষ সিনেমাটি। তবে মান্না ভক্তদের জন্য সুখবর হচ্ছে, চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে আসছে ‘জীবন যন্ত্রণা’।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ের একদল যৌনকর্মীর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘জীবন যন্ত্রণা’। এতে প্রয়াত নায়ক মান্না ছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগরসহ অনেকে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তির কথা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন সিনেমাটির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। সিনেমাটির মুক্তি প্রসঙ্গে খসরু বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গল্পের সিনেমা এটি, সংগত কারণে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ দিনকে সামনে রেখেই মুক্তি দিতে চাই। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে সিনেমাটি।’
চিত্রনায়ক মান্না চলে যাওয়ার দেড় দশক পেরিয়ে গেলেও কেন এতদিন সিনেমাটি আলোর মুখ দেখেনি?—এমন প্রশ্নে খসরু আরও বলেন, ‘লীলামন্থন নাম দিয়ে সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম। ওই নামে ২০১১ সালে সেন্সরে জমা দিই। কিন্তু নাম নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে ছাড়পত্র পেতে দেরি হয়। এছাড়াও নানা জটিলতায় এরপর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনার কারণেও মুক্তি পিছিয়ে যায়। আমি মনে করি, এই সময়ে তারকাবহুল সিনেমাটির আবেদনও অনেকটাই কমে গেছে। সিনেমাটি মুক্তি দিলেও হয়তো লোকসান হবে। এরপরও এটি মুক্তি দিতে চাই। তবে এটাও সত্য মান্না ভক্ত ও সাধারণ দর্শকরা অপেক্ষায় আছেন সিনেমাটির জন্য।’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সেন্সরে জমা পড়লেও সিনেমাটি ছাড়পত্র পায় এক দশক পর ২০২১ সালে। ছবিটির পরিচালক জাহিদ হোসেন জানান, সিনেমাটির শেষ দৃশ্য ও ডাবিংয়ের কাজ শেষ করে যেতে পারেননি মান্না। এর আগেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন তিনি। পরে ডামি ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলায় তার শহীদ হওয়ার দৃশ্যধারণ করা হয়। মান্নার অংশের আংশিক ডাবিং করেন অভিনেতা রাতিন।