জুলাইয়ের গণআন্দোলনে রাজপথে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই নয়, সরাসরি রাজপথে নেমে সরকারের দমননীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান তিনি।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ওই সময়কার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন বাঁধন। তিনি জানান, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর তার মনে এক ধরনের আবেগ কাজ করে। সেই আবেগ থেকেই জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে রিকশায় করে পুরো ঢাকা শহর ঘুরে বেড়ান তিনি।
বাঁধন বলেন, “৫ আগস্ট ‘পালাইছে পালাইছে’ শুনতে শুনতে আমি আড়াইটার সময় বনানী পর্যন্ত চলে যাই। তখন আমার গায়ে বাংলাদেশের পতাকা ছিল। সেই পতাকা পরে আমি রিকশায় করে পুরো শহর ঘুরে বেরিয়েছি।”
কেন তিনি আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, সে প্রশ্নের জবাবে বাঁধন বলেন, “আমরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিপীড়ন মেনে নেওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু যখন দেখলাম, নিরীহ ছাত্রদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে, তখন আর ঘরে বসে থাকা সম্ভব হয়নি। আমি একজন শিল্পী, একজন চিকিৎসক, একজন মা—সবকিছুর আগে আমি একজন মানুষ। সেই দায় থেকেই রাজপথে নামার সিদ্ধান্ত নিই।”
তিনি বলেন, “আমরা যখন রাজপথে নেমেছি, তখন কেউ জানত না ৫ আগস্টে কী হতে যাচ্ছে। আমরা রাষ্ট্রের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম। এটা ছিল বড় একটা ঝুঁকি, অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি।”
আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে বাঁধন বলেন, “ছাত্রদের থেকেই শিখেছি কীভাবে ভয়কে জয় করতে হয়, কীভাবে নিজের অধিকার আদায় করতে হয়। ভয় ছিল, তবে এক ধরনের আনন্দও ছিল। যারা রাজপথে ছিল না, তারা এই ইতিবাচক অনুভূতিটা বুঝবে না।”
তার মতে, এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা সবাই দেশকে ভালোবেসেই অংশ নিয়েছে। “সবাই চায় একটি স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ। সেই স্বপ্ন থেকেই মানুষ রাস্তায় নেমেছিল,” বলেন তিনি।
আশাবাদী বাঁধন মনে করেন, “আমরা অনেক কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছি। সামনে আরও সুন্দর, আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।”